জেনারেটর কি? জেনারেটরের কি কি সমস্যা হয়? জেনারেটর সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন
জেনারেটর কাকে বলে?
জেনারেটর কত প্রকার ও কি কি
ব্যবহারের ধরণ অনুযায়ীঃ
- পোর্টেবল জেনারেটরঃ বিদ্যুৎ বিভ্রাটের সময় ব্যবহারের জন্য।
- স্ট্যান্ডবাই জেনারেটরঃ দীর্ঘক্ষণ বিদ্যুৎ না থাকলে ব্যবহারের জন্য।
- প্রাইমারি জেনারেটরঃ বিদ্যুতের প্রধান উৎস হিসেবে ব্যবহারের জন্য।
বিদ্যুৎ উৎপাদনের ধরণ অনুযায়ীঃ
জেনারেটরের
কাজ কি?
জেনারেটরের মূল কাজ হলো যান্ত্রিক শক্তিকে বিদ্যুৎ শক্তিতে রূপান্তরিত করা। জেনারেটর ব্যবহার করে বৈদ্যুতিক শক্তি উৎপন্ন করা হয় যাতে যেকোনো অবস্থায় বা যেকোনো স্থানে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা সম্ভব হয়। এটি অনেক স্থানে ব্যবহার করা হয়, যেমন বাসা, কারখানা, হাসপাতাল, অফিস, ইভেন্ট, যানবাহন ইত্যাদি।
এটি বিভিন্ন ধরনের
জ্বালানী ব্যবহার করে বিদ্যুৎ প্রস্তুত
করে, যেমন ডিজেল, গ্যাস,
বায়োগ্যাস ইত্যাদি। যেখানে বিদ্যুৎ সরবরাহ না থাকে সেখানে জেনারেটর
ব্যবহার করে কাজে চালিয়ে
যাওয়া যায়।
আরও পড়ুনঃ ডায়নামো কি? ডায়নামো কিভাবে কাজ করে? ডায়নামো সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন
জেনারেটর কিভাবে কাজ করে?
1. চৌম্বক ক্ষেত্র তৈরি: ফিল্ড কুণ্ডলীতে বিদ্যুৎ প্রবাহ প্রয়োগ করলে একটি চৌম্বক ক্ষেত্র তৈরি হয়।
2. আর্মেচারের ঘূর্ণন: আর্মেচার চৌম্বক ক্ষেত্রের মধ্যে ঘোরে।
3. বিদ্যুৎ-চুম্বকীয় আবেশ: আর্মেচারের ঘূর্ণনের ফলে ফ্যারাডের সূত্র অনুসারে আর্মেচারে একটি তড়িৎ প্রবাহ উৎপন্ন হয়।
4. প্রবাহের দিক পরিবর্তন: কম্যুটেটর আর্মেচারে উৎপন্ন প্রবাহের দিক পরিবর্তন করে, যাতে এসি বিদ্যুৎ প্রবাহ স্থায়ী হয়।
5. বিদ্যুৎ বিতরণ: উৎপন্ন বিদ্যুৎ বিতরণের জন্য ট্রান্সফর্মার ব্যবহার করা হয়।
আরও পড়ুনঃ স্যাটেলাইট কি? স্যাটেলাইট কিভাবে কাজ করে? স্যাটেলাইট সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন
জেনারেটরের ব্যবহারঃ
জেনারেটর বিভিন্ন ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয়।
এর মধ্যে কয়েকটি উল্লেখযোগ্য ব্যবহার হলঃ
১) বিদ্যুৎ সরবরাহঃ
- বিদ্যুৎ বিভ্রাটের সময় বিকল্প বিদ্যুৎ সরবরাহ করার জন্য।
- বিদ্যুৎ নেই এমন স্থানে বিদ্যুৎ সরবরাহ করার জন্য।
- জরুরী পরিস্থিতিতে বিদ্যুৎ সরবরাহের জন্য।
২) নির্মাণ কাজঃ
- নির্মাণ স্থলে বিদ্যুৎ সরঞ্জাম চালানোর জন্য।
- ওয়েল্ডিং, ড্রিলিং, এবং কাটার মতো কাজের জন্য বিদ্যুৎ সরবরাহ করার জন্য।
৩) শিল্পঃ
- কারখানায় বিদ্যুৎ সরবরাহ করার জন্য।
- বিদ্যুৎ চালিত মেশিন চালানোর জন্য।
৪) কৃষিঃ
- সেচ ব্যবস্থায় পানি পাম্প করার জন্য।
- কৃষি সরঞ্জাম চালানোর জন্য।
৫) বাড়িতে ব্যবহারঃ
- লোডশেডিংয়ের সময় বাড়িতে বিদ্যুৎ সরবরাহ করার জন্য।
- ফ্রিজ, লাইট, এবং অন্যান্য ইলেকট্রনিক ডিভাইস চালানোর জন্য।
৬) অন্যান্য ব্যবহারঃ
- ক্যাম্পিং, ট্রেকিং, এবং অন্যান্য বহিরঙ্গন কার্যকলাপে বিদ্যুৎ সরবরাহ করার জন্য।
- টেলিযোগাযোগ টাওয়ারে বিদ্যুৎ সরবরাহ করার জন্য।
- হাসপাতাল, বিমানবন্দর, এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় বিদ্যুৎ সরবরাহ করার জন্য।
জেনারেটর ব্যবহারের সুবিধা ও অসুবিধাঃ
জেনারেটর ব্যবহারের সুবিধাঃ
- বিদ্যুতের বিকল্প উৎসঃ জেনারেটর বিদ্যুতের বিকল্প উৎস হিসেবে কাজ করে। বিদ্যুৎ বিভ্রাটের সময় জেনারেটর ব্যবহার করে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা যায়।
- বিদ্যুৎ বিহীন এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহঃ জেনারেটর ব্যবহার করে বিদ্যুৎ বিহীন এলাকায় বিদ্যুৎ সরবাহ করা যায়।
- শিল্প-কারখানায় বিদ্যুৎ সরবরাহঃ জেনারেটর ব্যবহার করে শিল্প-কারখানা চালানো যায়।
- কৃষিকাজে বিদ্যুৎ সরবরাহঃ জেনারেটর ব্যবহার করে কৃষিকাজের উন্নয়ন করা যায়।
- ঘরে-বাড়িতে বিদ্যুৎ সরবরাহঃ জেনারেটর ব্যবহার করে ঘরে-বাড়িতে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা যায়।
- চিকিৎসা সরঞ্জাম চালানোঃ জেনারেটর ব্যবহার করে চিকিৎসা সরঞ্জাম চালানো যায়।
- যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নঃ জেনারেটর ব্যবহার করে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন করা যায়।
- জরুরী সেবায় বিদ্যুৎ সরবরাহঃ জেনারেটর ব্যবহার করে জরুরী সেবায় বিদ্যুৎ সরবরাহ করা যায়।
- টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নঃ জেনারেটর ব্যবহার করে টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন করা যায়।
- বিনোদন ব্যবস্থার উন্নয়নঃ জেনারেটর ব্যবহার করে বিনোদন ব্যবস্থার উন্নয়ন করা যায়।
জেনারেটর ব্যবহারের অসুবিধাঃ
- পরিবেশের ক্ষতিঃ জেনারেটর ব্যবহারের সময় পরিবেশের ক্ষতি হতে পারে। জেনারেটর থেকে ধোঁয়া ও শব্দ বের হয় যা পরিবেশ দূষণ করে।
- শব্দ দূষণঃ জেনারেটর ব্যবহারের সময় শব্দ দূষণ হতে পারে। জেনারেটর থেকে তীব্র শব্দ বের হয় যা মানুষের জন্য ক্ষতিকর।
- খরচঃ জেনারেটর কেনা, স্থাপন এবং রক্ষণাবেক্ষণের খরচ বেশি।
- জ্বালানিঃ জেনারেটর চালানোর জন্য জ্বালানি (যেমন: ডিজেল, পেট্রোল, গ্যাস) প্রয়োজন। জ্বালানির দাম বেশি এবং জ্বালানি ব্যবহারের ফলে পরিবেশের ক্ষতি হয়।
- নির্ভরযোগ্যতাঃ জেনারেটর সবসময় নির্ভরযোগ্য নাও হতে পারে। জেনারেটর নষ্ট হলে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে যেতে পারে।
আরও পড়ুনঃ রিকন্ডিশন্ড গাড়ি কেনার গাইডলাইন
জেনারেটর ব্যবহার ও রক্ষণাবেক্ষণঃ
জেনারেটর ব্যবহারের নিয়মঃ
প্রস্তুতিঃ
- জেনারেটরের ম্যানুয়াল পড়ুন এবং নির্দেশাবলী অনুসরণ করুন।
- জ্বালানী স্তর পরীক্ষা করুন এবং প্রয়োজনে পূর্ণ করুন।
- তেলের স্তর পরীক্ষা করুন এবং প্রয়োজনে পরিবর্তন করুন।
- ব্যাটারি টার্মিনাল পরিষ্কার করুন।
- জেনারেটর এবং লোড সংযোগ স্থাপন করুন।
চালু করার ধাপঃ
- জেনারেটরের সুইচ "চালু" অবস্থানে আনুন।
- চোক (choke) ব্যবহার করে ইঞ্জিন শুরু করুন।
- ইঞ্জিন চালু হলে, চোক সরিয়ে ফেলুন।
- জেনারেটরের ভোল্টেজ এবং ফ্রিকোয়েন্সি পরীক্ষা করুন।
- লোড ধীরে ধীরে সংযুক্ত করুন।
বন্ধ করার ধাপঃ
- লোড সরিয়ে ফেলুন।
- জেনারেটরের সুইচ "বন্ধ" অবস্থানে আনুন।
- ইঞ্জিন ঠান্ডা হওয়ার জন্য অপেক্ষা করুন।
- জ্বালানী সরবরাহ বন্ধ করুন (প্রয়োজনে)।
- ব্যাটারি টার্মিনাল পরিষ্কার করুন।
জেনারেটর রক্ষণাবেক্ষণঃ
- নিয়মিত তেল পরিবর্তন করুন।
- এয়ার ফিল্টার পরিষ্কার বা পরিবর্তন করুন।
- স্পার্ক প্লাগ পরিষ্কার বা পরিবর্তন করুন।
- ব্যাটারি চার্জ পরীক্ষা করুন এবং প্রয়োজনে রিচার্জ করুন।
- জেনারেটরের বাইরের অংশ পরিষ্কার করুন।
- নিয়মিত জেনারেটর পরীক্ষা করুন।
আরও পড়ুনঃ যে লক্ষণে বুঝবেন গাড়ির ইঞ্জিন ভালো নেই
জেনারেটর ব্যবহারের সময় সতর্কতাঃ
- জেনারেটর কখনোই বদ্ধ জায়গায় চালাবেন না।
- জেনারেটর থেকে নির্গত ধোঁয়া বিষাক্ত, তাই এটি থেকে দূরে থাকুন।
- জেনারেটরের উপর জ্বালানী ঢালবেন না।
- জেনারেটরের তার নিয়ে টানাটানি করবেন না।
আরও পড়ুনঃ গাড়ির রেডিয়েটর ভালো রাখার উপায়
জেনারেটর দিয়ে কি কি চালানো যায়?
জেনারেটর দিয়ে বিভিন্ন ধরণের ইলেকট্রিক্যাল যন্ত্রপাতি চালানো যায়। জেনারেটরের ক্ষমতা (KW) এর উপর নির্ভর করে আপনি কতটা বিদ্যুৎ ব্যবহার করতে পারবেন।
কিছু উদাহরণ নিচে দেওয়া হলোঃ
ছোট জেনারেটর (1-3 KW):
- লাইট
- ফ্যান
- মোবাইল চার্জার
- ল্যাপটপ
- ছোট টিভি
- পানির পাম্প ইত্যাদি।
মাঝারি জেনারেটর (3-5 KW):
- উপরে উল্লেখিত সবকিছু।
- এয়ার কন্ডিশনার।
- রেফ্রিজারেটর।
- ওয়াশিং মেশিন।
- মাইক্রোওয়েভ ওভেন।
- ছোট মোটর ইত্যাদি।
বড় জেনারেটর (5 KW এর বেশি):
- উপরে উল্লেখিত সবকিছু।
- বিদ্যুৎ চালিত সরঞ্জাম।
- যানবাহন (ইলেকট্রিক গাড়ি)।
- বড় মোটর।
- শিল্প-কারখানার যন্ত্রপাতি ইত্যাদি।
জেনারেটর কিভাবে বিদ্যুৎ উৎপন্ন করে?
জেনারেটর কোন নীতিতে কাজ করে?
জেনারেটর তৈরি করার পদ্ধতিঃ
জেনারেটরের ধরণ এবং আকারের উপর নির্ভর করে জেনারেটর তৈরি পদ্ধতি।
কিছু সাধারণ পদক্ষেপঃ
1. ডিজাইনঃ
- জেনারেটরের ধরণ (AC/DC), ক্ষমতা (KW), ভোল্টেজ (V), এবং RPM নির্ধারণ করুন।
- জেনারেটরের বিভিন্ন অংশের (যেমন: ইঞ্জিন, চৌম্বক, কন্ডাক্টর, ইত্যাদি) নকশা তৈরি করুন।
2. উপকরণ সংগ্রহঃ
- নকশা অনুযায়ী প্রয়োজনীয় উপকরণ (যেমন: ইঞ্জিন, চৌম্বক, তার, ইত্যাদি) সংগ্রহ করুন।
3. নির্মাণঃ
- নকশা অনুসারে জেনারেটরের বিভিন্ন অংশ একত্রিত করুন।
- ইঞ্জিন, চৌম্বক, কন্ডাক্টর, এবং অন্যান্য অংশ সঠিকভাবে সংযুক্ত করুন।
4.পরীক্ষাঃ
- জেনারেটর চালিয়ে দেখুন এবং এর কর্মক্ষমতা পরীক্ষা করুন।
- বিদ্যুতের ভোল্টেজ, ফ্রিকোয়েন্সি, এবং ক্ষমতা পরিমাপ করুন।
5. রক্ষণাবেক্ষণঃ
- জেনারেটরের নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণ করুন।
- ইঞ্জিনের তেল পরিবর্তন, ব্রাশ ও কমুটেটর পরিষ্কার, এবং অন্যান্য রক্ষণাবেক্ষণের কাজ করুন।
6. জেনারেটর তৈরি করার সময় কিছু সতর্কতা অবলম্বন করা উচিতঃ
- ইলেকট্রিক কাজের অভিজ্ঞতা থাকলে এবং জেনারেটর সম্পর্কে পরিপূর্ণ ধারনা নিয়েই জেনারেটর তৈরি করা উচিত।
- সঠিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করে জেনারেটর তৈরি ও ব্যবহার করা উচিত।
- জেনারেটরের নকশা ও নির্মাণের কাজে অভিজ্ঞ ব্যক্তিদের সাহায্য নেওয়া উচিত।
মনে রাখবেনঃ জেনারেটর তৈরি করা একটি জটিল কাজ। যদি আপনার ইলেকট্রিক কাজের অভিজ্ঞতা না থাকে, তাহলে জেনারেটর তৈরি করার চেষ্টা না করাই ভালো। বাজারে বিভিন্ন ধরণের জেনারেটর পাওয়া যায়। আপনার চাহিদা অনুযায়ী বাজার থেকে জেনারেটর কিনে ব্যবহার করা সহজ ও নিরাপদ।
আরও পড়ুনঃ রেফ্রিজারেটর কি? কত প্রকার ও কি কি? রেফ্রিজারেটর সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন
জেনারেটর এর বিভিন্ন অংশঃ
জেনারেটরের বিভিন্ন অংশের নাম:
1. ইঞ্জিন: জেনারেটরের শক্তি উৎপাদনকারী অংশ। এটি বিভিন্ন ধরণের জ্বালানী (যেমন ডিজেল, পেট্রোল, প্রাকৃতিক গ্যাস) দ্বারা চালিত হতে পারে।
2. রটর: ইঞ্জিনের সাথে সংযুক্ত ঘূর্ণায়মান অংশ। জেনারেটরের ঘূর্ণনশীল অংশ, যা যান্ত্রিক শক্তি গ্রহণ করে। এতে কয়েল থাকে যা চৌম্বক ক্ষেত্র তৈরি করে।
3. স্টেটর: রটরের চারপাশে স্থির থাকা অংশ। এতেও কয়েল থাকে যা রটরের ঘূর্ণায়মান চৌম্বক ক্ষেত্রের সাথে প্রবাহিত হয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন করে। জেনারেটরের স্থির অংশ, যা তড়িৎ শক্তি উৎপাদন করে।
4. ফিল্ড কয়েল: রোটর বা স্টেটরের চারপাশে জড়ানো তারের কয়েল, যা চৌম্বক ক্ষেত্র তৈরি করে।
5. আর্মেচার: স্টেটরের অংশ যা তড়িৎ প্রবাহ উৎপাদন করে।
6. কম্যুটেটর: আর্মেচারের একটি অংশ যা AC তড়িৎ প্রবাহকে DC তড়িৎ প্রবাহে রূপান্তরিত করে।
7. ফ্রেম: জেনারেটরের সমস্ত অংশ ধরে রাখার জন্য তৈরি কাঠামো।
8. কন্ট্রোল প্যানেল: জেনারেটরের বিদ্যুৎ নিয়ন্ত্রণ করার জন্য ব্যবহৃত প্যানেল। এতে ভোল্টেজ, ফ্রিকোয়েন্সি এবং অন্যান্য পরিমাপের নিয়ন্ত্রণ থাকে।
9. রেগুলেটর: জেনারেটরের আউটপুট ভোল্টেজ এবং ফ্রিকোয়েন্সি নিয়ন্ত্রণ করে।
10. ব্রাশ: রটরের কয়েল থেকে বিদ্যুৎ সংগ্রহ করে বাইরের সার্কিটে সরবরাহ করার জন্য ব্যবহৃত কার্বন ব্রাশ।
11. স্লিপ রিং: ব্রাশের পরিবর্তে ব্যবহৃত ঘূর্ণায়মান রিং যা রটরের কয়েল থেকে বিদ্যুৎ সংগ্রহ করে বাইরের সার্কিটে সরবরাহ করে।
12. এয়ার ফিল্টার: জেনারেটরের ভেতরে ধুলোবালি প্রবেশ ঠেকাতে ব্যবহৃত হয় এয়ার ফিল্টার।
13. শব্দ নিরোধক: জেনারেটরের শব্দ কমাতে ব্যবহৃত হয় শব্দ নিরোধক।
14. জ্বালানী ট্যাঙ্ক: জেনারেটরের ইঞ্জিন চালানোর জন্য জ্বালানি ধরে রাখার ট্যাঙ্ক।
15. কুল্যান্ট: জেনারেটরকে অতিরিক্ত তাপ থেকে রক্ষা করতে ব্যবহৃত তরল বা গ্যাস।
16. হাউজিং: জেনারেটরের অভ্যন্তরীণ উপাদানগুলিকে ঘিরে রাখে এবং সুরক্ষা প্রদান করে।
উল্লেখ্য: জেনারেটরের ধরণ (AC/DC, পোর্টেবল/স্টেশনারি) ভেদে এর অংশের সংখ্যা ও নামে কিছুটা ভিন্নতা থাকে।
আরও পড়ুনঃ সেন্সর কি? সেন্সর কত প্রকার ও কি কি? সেন্সর এর কাজ কি? সেন্সর সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা
জেনারেটরের কি কি সমস্যা হয়?
1. ইঞ্জিন সম্পর্কিত সমস্যাঃ
- ইঞ্জিন চালু না হওয়াঃ জ্বালানী সরবরাহে সমস্যা, ব্যাটারি সমস্যা, স্পার্ক প্লাগ সমস্যা, ইত্যাদি।
- ইঞ্জিন অতিরিক্ত গরম হওয়াঃ তেলের সমস্যা, শীতলকরণ ব্যবস্থার সমস্যা, ইত্যাদি।
- ইঞ্জিনের তেল ফুটোঃ তেলের সিল ভেঙে যাওয়া, তেলের পাইপ ফুটো, ইত্যাদি।
- ইঞ্জিনের ধোঁয়া বের হওয়াঃ ইঞ্জিনের অভ্যন্তরীণ সমস্যা, ইত্যাদি।
2. বিদ্যুৎ উৎপাদন সম্পর্কিত সমস্যাঃ
- ভোল্টেজের ওঠানামাঃ AVR (Automatic Voltage Regulator) সমস্যা, জেনারেটরের ওভারলোড, ইত্যাদি।
- বিদ্যুতের ফ্রিকোয়েন্সিতে সমস্যা: জেনারেটরের গতি নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থার সমস্যা, ইত্যাদি।
- বিদ্যুতের বিভ্রাট: জেনারেটরের ব্রাশ ও কমুটেটরের সমস্যা, ইত্যাদি।
3. অন্যান্য সমস্যাঃ
- জেনারেটরের শব্দ: জেনারেটরের ভারসাম্যহীনতা, ইঞ্জিনের সমস্যা, ইত্যাদি।
- জেনারেটরের তেল লিকেজ: তেলের সিল ভেঙে যাওয়া, তেলের পাইপ ফুটো, ইত্যাদি।
- জেনারেটরের ব্যাটারি সমস্যা: ব্যাটারির চার্জ কমে যাওয়া, ব্যাটারির প্লেটের সমস্যা, ইত্যাদি।
- জ্বালানী সরবরাহের সমস্যাঃ যদি জেনারেটরের জ্বালানী সরবরাহে সমস্যা হয়, তবে এটি সঠিকভাবে কাজ করতে পারে না।
- জ্বালানী গলন বা মিশ্রণে সমস্যাঃ অপ্টিমাম জ্বালানী গলন বা মিশ্রণ না হলে জেনারেটরের কার্যক্ষমতা কমে যেতে পারে।
- ইঞ্জিন সমস্যাঃ ইঞ্জিনের কোন সমস্যা হলে জেনারেটর ঠিকঠাক ভাবে কাজ করতে পারে না।
- ব্যাটারি সমস্যাঃ কিছু জেনারেটরে ব্যাটারি ব্যবহার হয়, তাই ব্যাটারিতে যদি পর্যাপ্ত চার্জ না থাকে তাহলে জেনারেটর স্টার্ট দেওয়া না।
- সার্কিট সমস্যাঃ বিভিন্ন সময় জেনারেটরের ইলেক্ট্রিক সার্কির্টে সমস্যা হতে পারে।
- জেনারেটরে কোন সমস্যা হয়েছে তা বের করে সেই অনুযায়ী সমাধান করতে হবে।
- জেনারেটরের নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণ করলে অনেক সমস্যা এড়ানো সম্ভব।
- জেনারেটর সম্পর্কে ভালো জ্ঞান না থাকলে অভিজ্ঞ ইলেকট্রিশিয়ানের সাহায্য নেওয়া উচিত।
- জেনারেটর ব্যবহারের সময় সাবধানতা অবলম্বন করা উচিত।
- জেনারেটর চালানোর সময় সঠিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত।
- জেনারেটরের ধোঁয়া মানুষের জন্য ক্ষতিকর, তাই জেনারেটর খোলা জায়গায় চালানো উচিত।
জেনারেটর ও অল্টারনেটরের পার্থক্যঃ
জেনারেটর ও অল্টারনেটরের মধ্যে পার্থক্য নিচে দেওয়া হলোঃ
বিদ্যুৎ উৎপাদনঃ
জেনারেটরঃ
- যান্ত্রিক শক্তিকে বিদ্যুৎ শক্তিতে রূপান্তরিত করে।
- AC বা DC উভয় ধরণের বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে পারে।
অল্টারনেটরঃ
- যান্ত্রিক শক্তিকে বিদ্যুৎ শক্তিতে (AC ) রূপান্তরিত করে।
- DC বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে পারে না।
ব্যবহারঃ
জেনারেটরঃ
- বিদ্যুতের প্রধান উৎস হিসেবে ব্যবহার করা হয়।
- বিদ্যুৎ বিভ্রাটের সময় ব্যবহার করা হয়।
অল্টারনেটরঃ
- যানবাহনে বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য ব্যবহার করা হয়।
- কিছু ক্ষেত্রে বিদ্যুতের প্রধান উৎস হিসেবে ব্যবহার করা হয়।
কার্যপ্রণালীঃ
জেনারেটরঃ
- একটি চৌম্বক ক্ষেত্রের মধ্যে একটি পরিবাহী ঘোরানো হয়।
- পরিবাহীতে বিদ্যুৎ প্রবাহ সৃষ্টি হয়।
অল্টারনেটরঃ
- একটি ঘূর্ণায়মান চৌম্বক ক্ষেত্র স্থির পরিবাহীর মধ্যে বিদ্যুৎ প্রবাহ সৃষ্টি করে।
অন্যান্য পার্থক্যঃ
জেনারেটরঃ
- বিভিন্ন আকারে পাওয়া যায়।
- বিভিন্ন ধরণের জ্বালানি ব্যবহার করে চালানো যায়।
অল্টারনেটরঃ
- তুলনামূলকভাবে ছোট আকারের।
- সাধারণত যানবাহনের ইঞ্জিনের সাথে সংযুক্ত থাকে।
জেনারেটর না অল্টারনেটর কোনটি ব্যবহার করবেন?
আপনার চাহিদা অনুযায়ী জেনারেটর বা অল্টারনেটর নির্বাচন করতে পারেন। বিদ্যুতের প্রধান উৎস হিসেবে জেনারেটর ব্যবহার করা হয়। যানবাহনে বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য অল্টারনেটর ব্যবহার করা হয়।
মনে রাখবেনঃ জেনারেটর ও অল্টারনেটর দুটিই বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য ব্যবহৃত হয়। আপনার চাহিদা অনুযায়ী কোনটি ব্যবহার করবেন তা নির্ধারণ করতে হবে।
ডায়নামো ও জেনারেটর এর মধ্যে পার্থক্যঃ
ডায়নামো ও জেনারেটর এর মধ্যে পার্থক্য নিচে দেওয়া হলোঃ
ব্যবহারঃ
ডায়নামোঃ
- DC বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য ব্যবহৃত হয়।
- বাইসাইকেলের লাইট, টর্চলাইট, ইত্যাদিতে ব্যবহৃত হয়।
- ছোট আকারের বিদ্যুৎ সরবরাহের জন্য ব্যবহৃত হয়।
- AC বা DC বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য ব্যবহৃত হয়।
- বাড়িতে, অফিসে, শিল্পে, এবং অন্যান্য স্থানে ব্যবহৃত হয়।
- বড় আকারের বিদ্যুৎ সরবরাহের জন্য ব্যবহৃত হয়।
কার্যপ্রণালীঃ
ডায়নামোঃ
- একটি চৌম্বক ক্ষেত্রের মধ্যে একটি কন্ডাক্টর ঘোরানো হয়।
- কন্ডাক্টরে বিদ্যুৎ প্রবাহ সৃষ্টি হয়।
- কমিউটেটর ব্যবহার করে বিদ্যুতের প্রবাহের দিক স্থির রাখা হয়।
জেনারেটরঃ
- একটি চৌম্বক ক্ষেত্রের মধ্যে একটি কন্ডাক্টর ঘোরানো হয়।
- কন্ডাক্টরে বিদ্যুৎ প্রবাহ সৃষ্টি হয়।
- কন্ডাক্টর ঘোরার ফলে বিদ্যুতের প্রবাহের দিক পর্যায়ক্রমে পরিবর্তিত হয়।
অন্যান্য পার্থক্যঃ
ডায়নামোঃ
- তুলনামূলকভাবে ছোট আকারের।
- কম খরচে তৈরি করা যায়।
- রক্ষণাবেক্ষণ সহজ।
জেনারেটরঃ
- তুলনামূলকভাবে বড় আকারের।
- বেশি খরচে তৈরি করা যায়।
- রক্ষণাবেক্ষণ জটিল।
কোনটি ব্যবহার করবেন?
- আপনার চাহিদা অনুযায়ী ডায়নামো বা জেনারেটর নির্বাচন করতে হবে।
- ছোট আকারের বিদ্যুৎ সরবরাহের জন্য ডায়নামো ব্যবহার করা হয়।
- বড় আকারের বিদ্যুৎ সরবরাহের জন্য জেনারেটর ব্যবহার করা হয়।
মনে রাখবেনঃ ডায়নামো ও জেনারেটর দুটিই বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য ব্যবহৃত হয়। আপনার চাহিদা অনুযায়ী কোনটি ব্যবহার করবেন তা নির্ধারণ করতে হবে।
আরও পড়ুনঃ সেন্ট্রিফিউগ্যাল পাম্প এবং রেসিপ্রোকেটিং পাম্পের মধ্যে পার্থক্য
মোটর ও জেনারেটরের মধ্যে পার্থক্য
মোটর:
1. মোটর বিদ্যুৎকে যান্ত্রিক শক্তিতে রূপান্তর করে। যখন একটি মোটরে বিদ্যুৎ প্রবাহিত হয়, তখন এটি একটি চৌম্বক ক্ষেত্র তৈরি করে যা রোটারকে ঘোরায়। রোটারটি সাধারণত একটি শ্যাফ্টের সাথে সংযুক্ত থাকে, যা যান্ত্রিক শক্তি সরবরাহ করে।
2. বৈদ্যুতিক শক্তিকে যান্ত্রিক শক্তিতে রূপান্তরিত করে। অর্থাৎ বৈদ্যুতিক ইনপুট নিয়ে ঘূর্ণন/গতি উৎপন্ন করে।
3. মোটর সাধারণত বিদ্যুৎ সরবরাহের সাথে সংযুক্ত থাকে।
4. মোটর সাধারণত ঘূর্ণন গতির জন্য ডিজাইন করা হয়।
5. মোটর সাধারণত ছোট এবং হালকা হয়।
6. মোটরের ইনপুট হল বৈদ্যুতিক শক্তি এবং আউটপুট হল যান্ত্রিক শক্তি।
7. মোটরগুলি গাড়ি, ইন্ডাস্ট্রিয়াল মেশিন, অ্যাপ্লায়েন্স ইত্যাদিতে ব্যবহৃত হয় যেখানে যান্ত্রিক শক্তির প্রয়োজন।
জেনারেটর:
1. জেনারেটর যান্ত্রিক শক্তিকে বিদ্যুতে রূপান্তর করে। যখন একটি জেনারেটরের রোটর ঘোরে, তখন এটি একটি চৌম্বক ক্ষেত্র তৈরি করে যা স্টেটরে বিদ্যুৎ প্রবাহিত করে। স্টেটর সাধারণত রোটারকে ঘিরে থাকে এবং এতে কয়েল থাকে যা বিদ্যুৎ উৎপন্ন করে।
2. যান্ত্রিক শক্তিকে বৈদ্যুতিক শক্তিতে রূপান্তরিত করে। অর্থাৎ যান্ত্রিক ইনপুট নিয়ে বৈদ্যুতিক শক্তি উৎপন্ন করে।
3. জেনারেটর সাধারণত একটি যান্ত্রিক ড্রাইভের সাথে সংযুক্ত থাকে।
4. জেনারেটর সাধারণত বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য ডিজাইন করা হয়।
5. জেনারেটর সাধারণত বড় এবং ভারী হয়।
6. জেনারেটরের ইনপুট হল যান্ত্রিক শক্তি এবং আউটপুট হল বৈদ্যুতিক শক্তি।
7. জেনারেটরগুলি বিদ্যুৎ কেন্দ্র, বায়ু/সৌর বিদ্যুৎ প্ল্যান্টে ব্যবহৃত হয় বৈদ্যুতিক শক্তি উৎপাদনের জন্য।
মোটর ও জেনারেটর মধ্যে পার্থক্য টেবিল আকারে দেওয়া হলোঃ
বৈশিষ্ট্য | মোটর | জেনারেটর |
---|---|---|
প্রবেশকৃত শক্তি | বিদ্যুৎ | যান্ত্রিক শক্তি |
নির্গত শক্তি | যান্ত্রিক শক্তি | বিদ্যুৎ |
কাজের নীতি | বিদ্যুৎ চৌম্বক ক্ষেত্র তৈরি করে যা ঘূর্ণায়মান টর্ক তৈরি করে। | ঘূর্ণায়মান চৌম্বক ক্ষেত্র বিদ্যুৎ প্রবাহ উৎপন্ন করে। |
ঘোরার দিক | মোটর সাধারণত একদিকে ঘোরে। | জেনারেটর দুদিকে ঘুরতে পারে। |
নিয়ন্ত্রণ | মোটরের গতি নিয়ন্ত্রণ করা সহজ, জেনারেটরের তুলনায়। | জেনারেটরের গতি নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন, মোটরের তুলনায়। |
আকার | মোটর সাধারণত জেনারেটরের চেয়ে ছোট হয়। | জেনারেটর সাধারণত মোটরের চেয়ে বড় হয়। |
উদাহরণ | ফ্যান, রিফ্রিজারেটর, গাড়ির ইলেকট্রিক মোটর, পাখা, পাম্প, ওয়াশিং মেশিন ইত্যাদি। | বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জেনারেটর, ডিজেল জেনারেটর, পোর্টেবল জেনারেটর, গাড়ির জেনারেটর ইত্যাদি। |
মোটর এবং জেনারেটরের মধ্যে মূল পার্থক্য হল শক্তির প্রবাহের দিক। মোটরে, শক্তি বিদ্যুৎ থেকে যান্ত্রিক শক্তিতে প্রবাহিত হয়। জেনারেটরে, শক্তি যান্ত্রিক শক্তি থেকে বিদ্যুতে প্রবাহিত হয়।
একইভাবে অপারেশন করার কারণে একই ডিভাইসকে উল্টো দিকে চালালে একটি মোটর জেনারেটর হিসেবে কাজ করতে পারে এবং একটি জেনারেটরও মোটর হিসেবে কাজ করতে পারে।
মোটর এবং জেনারেটর একে অপরের পরিপূরক। মোটর বিদ্যুৎ ব্যবহার করে যান্ত্রিক কাজ করে, জেনারেটর যান্ত্রিক শক্তি ব্যবহার করে বিদ্যুৎ তৈরি করে। আমাদের আধুনিক জীবনে উভয়ই অপরিহার্য।
আরও পড়ুনঃ সেন্ট্রিফিউগাল পাম্প কাকে বলে? কত প্রকার ও কি কি? বিস্তারিত আলোচনা
এসি জেনারেটর ও ডিসি জেনারেটরের মধ্যে পার্থক্যঃ
এসি জেনারেটর ও ডিসি জেনারেটরের মধ্যে পার্থক্য নিচে দেওয়া হলো:
বিদ্যুতের প্রবাহের ধরণ:
- এসি জেনারেটর: অল্টারনেটিভ তড়িৎ প্রবাহ (AC) উৎপাদন করে।
- ডিসি জেনারেটর: ডাইরেক্ট তড়িৎ প্রবাহ (DC) উৎপাদন করে।
কর্মপ্রণালী:
এসি জেনারেটর:
- একটি চৌম্বক ক্ষেত্রের মধ্যে একটি কন্ডাক্টর ঘোরানো হয়।
- কন্ডাক্টরে বিদ্যুৎ প্রবাহ সৃষ্টি হয়।
- কন্ডাক্টর ঘোরার ফলে বিদ্যুতের প্রবাহের দিক পর্যায়ক্রমে পরিবর্তিত হয়।
ডিসি জেনারেটর:
- একটি চৌম্বক ক্ষেত্রের মধ্যে একটি কন্ডাক্টর ঘোরানো হয়।
- কন্ডাক্টরে বিদ্যুৎ প্রবাহ সৃষ্টি হয়।
- কমিউটেটর ব্যবহার করে বিদ্যুতের প্রবাহের দিক স্থির রাখা হয়।
ব্যবহার:
এসি জেনারেটর:
- বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ব্যবহৃত হয়।
- বাড়িতে, অফিসে, শিল্পে, এবং অন্যান্য স্থানে ব্যবহার করা হয়।
ডিসি জেনারেটর:
- বিশেষ কিছু ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয়।
- ব্যাটারি চার্জ করার জন্য, ইলেকট্রনিক ডিভাইস চালানোর জন্য ব্যবহার করা হয়।
অন্যান্য পার্থক্য:
এসি জেনারেটর:
- সহজে তৈরি করা যায়।
- রক্ষণাবেক্ষণ সহজ।
- দীর্ঘস্থায়ী।
- কম খরচে তৈরি করা যায়।
ডিসি জেনারেটর:
- তৈরি করা জটিল।
- রক্ষণাবেক্ষণ জটিল।
- কম দীর্ঘস্থায়ী।
- তৈরি করতে বেশি খরচ হয়।
জেনারেটর অপারেটর এর কাজ কি?
জেনারেটর অপারেটর বিদ্যুৎ কেন্দ্র, হাসপাতাল, শিল্প প্রতিষ্ঠান, বা অন্যান্য স্থানে বিদ্যুৎ উৎপাদন ও বিতরণ ব্যবস্থা পরিচালনা এবং রক্ষণাবেক্ষণের জন্য দায়িত্বশীল।
তাদের প্রধান কাজগুলির মধ্যে রয়েছে:
- জেনারেটর চালানো এবং নিয়ন্ত্রণ করা: জেনারেটর অপারেটর বিভিন্ন ধরণের জেনারেটর চালু, বন্ধ এবং নিয়ন্ত্রণ করে যা বিদ্যুৎ উৎপাদন করে।
- বিদ্যুৎ বিতরণ ব্যবস্থা পর্যবেক্ষণ করা: তারা নিশ্চিত করে যে বিদ্যুৎ সরবরাহ নিরাপদ এবং স্থিতিশীল, এবং সম্ভাব্য সমস্যাগুলি সনাক্ত করে এবং সমাধান করে।
- সরঞ্জাম এবং সিস্টেম রক্ষণাবেক্ষণ করা: জেনারেটর, ট্রান্সফরমার, সুইচগিয়ার এবং অন্যান্য বিদ্যুৎ সরবরাহ সরঞ্জামগুলি নিয়মিত পরিদর্শন, পরিষ্কার এবং মেরামত করে।
- বিদ্যুৎ ব্যবস্থায় ত্রুটি সমাধান করা: বিদ্যুৎ বিভ্রাট, ব্ল্যাকআউট এবং অন্যান্য ত্রুটিগুলি সনাক্ত করে এবং সমাধান করে।
- বিদ্যুৎ ব্যবস্থা সংক্রান্ত নীতিমালা ও নিরাপত্তা প্রবিধান মেনে চলা: নিরাপদ এবং কার্যকর বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করার জন্য নীতিমালা এবং নিরাপত্তা প্রবিধানগুলি মেনে চলে।
- প্রশিক্ষণ ও তত্ত্বাবধান: জুনিয়র অপারেটরদের প্রশিক্ষণ দেয় এবং তত্ত্বাবধান করে।
- রেকর্ড রাখা: জেনারেটরের কর্মক্ষমতা, বিদ্যুৎ উৎপাদন, এবং রক্ষণাবেক্ষণ কার্যক্রম সংক্রান্ত রেকর্ড রাখে।
আরও পড়ুনঃ গাড়ির ব্রেক ফেল করলে করণীয় কি?
জেনারেটর কে আবিষ্কার করেন?
আরও পড়ুনঃ ডায়নামো কি? ডায়নামো কিভাবে কাজ করে? ডায়নামো সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন
জেনারেটরের ধাপে ধাপে উন্নয়ন:
- 1800-এর দশকের প্রথম দিকে: প্রাথমিক জেনারেটর ছিল বড় এবং ভারী, এবং সীমিত পরিমাণে বিদ্যুৎ উৎপন্ন করতে পারত।
- 1800-এর দশকের মাঝামাঝি: উন্নত ডিজাইন এবং উপকরণ ব্যবহার করে জেনারেটর আরও ছোট, হালকা এবং আরও কার্যকর হয়ে ওঠে।
- 1900-এর দশক: AC জেনারেটরের বিকাশ বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থার ব্যাপক প্রসার ঘটায়।
- 2000-এর দশক: আধুনিক জেনারেটর আরও পরিবেশবান্ধব এবং জ্বালানি দক্ষ হয়ে উঠেছে।