রোজা ভঙ্গের কারণগুলো কি কি? বিস্তারিত জানুন

রোজা ভঙ্গের কারণ কি?

ইসলামে রোজা ভঙ্গ হওয়ার বিভিন্ন কারণ রয়েছে। রোজা ভঙ্গের কারণগুলি ইসলামী শরীয়াহ অনুসারে নির্ধারিত হয়েছে।

রোজা ভঙ্গের কারণগুলো কি কি? বিস্তারিত জানুন

নিচে রোজা ভঙ্গের কিছু প্রধান কারণ উল্লেখ করা হলো:

১। ইচ্ছাকৃত পানাহার:

সূর্যোদয় থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত ইচ্ছাকৃতভাবে কোনো কিছু পান বা আহার করলে রোজা ভেঙে যায়।

২। ইচ্ছাকৃত বমি:

ইচ্ছাকৃতভাবে মুখ ভরে বমি করলে রোজা ভেঙে যায়। তবে অনিচ্ছাকৃত বমি হলে রোজা ভাঙে না।

৩। বিশেষ সময়ে নারীদের ঋতুস্রাব:

 নারীদের ঋতুস্রাব বা সন্তান প্রসব পরবর্তী স্রাব হলে রোজা ভেঙে যায়।

৪। যৌন সম্পর্ক স্থাপন:

রোজা অবস্থায় স্বামী-স্ত্রীর সহবাস করলে রোজা ভেঙে যায়। রোজা অবস্থায় যৌন সম্পর্ক স্থাপন করলে রোজা ভঙ্গ হয়ে যায় এবং এর জন্য কাফফারা (৬০ দিন রোজা রাখা বা একজন দাস মুক্ত করা বা ৬০ জন মিসকিনকে খাবার দেওয়া) প্রয়োজন।

৫। ধূমপান বা মাদক সেবন:

ধূমপান বা মাদক সেবন করলে রোজা ভেঙে যায়। ইচ্ছাকৃতভাবে ধূমপান বা কোনো ধরনের ধোঁয়া গ্রহণ করলে রোজা ভঙ্গ হয়ে যায়।

৬। ইনজেকশন বা সেলাইন গ্রহণ:

গ্লুকোজ বা শক্তিবর্ধক ইনজেকশন বা সেলাইন গ্রহণ করলে রোজা ভেঙে যায়।

৭। ভুলবশত কিছু খেয়ে রোজা ভেঙে গেছে ভেবে ইচ্ছাকৃতভাবে আবার খাওয়া:

ভুলবশত কিছু খেয়ে রোজা ভেঙে গেছে ভেবে ইচ্ছাকৃতভাবে আবার খেলে রোজা ভেঙে যায়।

৮। সময় ভুল হলে:

ইফতারের সময় হয়েছে ভেবে সূর্যাস্তের আগে ইফতার করলে রোজা ভেঙে যায়।

৯। ঔষধ গ্রহণ:

প্রস্রাব-পায়খানার রাস্তা দিয়ে ঔষধ বা অন্য কিছু শরীরে প্রবেশ করালে রোজা ভেঙে যায়।

১০। ইচ্ছাকৃতভাবে বমি করা:

যদি কেউ ইচ্ছাকৃতভাবে বমি করে, তাহলে তার রোজা ভঙ্গ হয়ে যায়। তবে অনিচ্ছাকৃতভাবে বমি হলে রোজা ভঙ্গ হয় না।

১১। কুলি করার সময় পানি গিলে ফেলা:

যদি কেউ কুলি করার সময় ইচ্ছাকৃতভাবে পানি গিলে ফেলে, তাহলে তার রোজা ভঙ্গ হয়ে যায়।

১২। নাক বা কানে ওষুধ দেওয়া:

যদি কেউ নাক বা কানে ওষুধ প্রয়োগ করে এবং তা গলার ভিতরে চলে যায়, তাহলে রোজা ভঙ্গ হয়ে যায়।

১৩। শরীরে পুষ্টিকর পদার্থ প্রবেশ করানো: ইচ্ছাকৃতভাবে ইনজেকশন বা অন্য কোনো উপায়ে শরীরে পুষ্টি সরবরাহ করলে রোজা ভঙ্গ হতে পারে। তবে চিকিৎসার জন্য ইনজেকশন নিলে অনেক আলেমের মতে রোজা ভঙ্গ হয় না।

১৪। মুখ দিয়ে কিছু গিলে ফেলা:

যদি কেউ ইচ্ছাকৃতভাবে কোনো কঠিন বা তরল পদার্থ গিলে ফেলে, তাহলে রোজা ভেঙে যায়।

১৫। ইঞ্জেকশন বা ড্রিপের মাধ্যমে পুষ্টি গ্রহণ:

যদি কেউ ইঞ্জেকশন বা ড্রিপের মাধ্যমে পুষ্টি গ্রহণ করে, তাহলে তার রোজা ভঙ্গ হয়ে যায়। তবে প্রয়োজনীয় চিকিৎসার জন্য দেওয়া ইনজেকশন (যেমন ইনসুলিন) সাধারণত রোজা ভঙ্গ করে না।

১৬। রোজা রাখার ইচ্ছা ত্যাগ করা:

যদি কেউ রোজা রাখার ইচ্ছা ত্যাগ করে এবং তা প্রকাশ করে, তাহলে তার রোজা ভঙ্গ হয়ে যায়।

এছাড়াও, আরও বিভিন্ন কারণে রোজা ভেঙে যেতে পারে। তাই রোজা রাখার আগে রোজার নিয়ম সম্পর্কে ভালোভাবে জেনে নেওয়া উচিত। তবে অজান্তে বা বাধ্য হয়ে কিছু হলে রোজা অক্ষত থাকে।

রোজা ভঙ্গ হয়ে গেলে সাধারণত কাজা (পুনরায় রোজা রাখা) বা কাফফারা (যদি যৌন সম্পর্কের কারণে ভঙ্গ হয়ে থাকে) প্রয়োজন হতে পারে। প্রতিটি ক্ষেত্রে সঠিক নির্দেশনার জন্য ইসলামী স্কলার বা আলেমের পরামর্শ নেওয়া উচিত।

আরও পড়ুনঃ আল্লাহর ৯৯ নাম | আল্লাহর ৯৯ নামের ফজিলত

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url