ই-কমার্স কি? ই-কমার্স সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা

ই-কমার্স কি?

সাধারণত আমরা কোন পন্য কিনতে বা বিক্রির জন্য মার্কেট বা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে যাই। সেখানে আমরা পন্য দেখি পছন্দ করি অতপর পন্যটি ক্রয় করি এবং অর্থের লেনদেন টা ও আমরা সাথে সাথে সেরে ফেলি। ই-কর্মাস হলো এমন একটা মিডিয়া যার মাধ্যমে আমরা উপরক্ত কাজ গুলি ঘরে বা যেকোন জায়গাই বসে Just a Click এর মাধ্যমে করে ফেলতে পারি। অর্থাৎ একটি কম্পিউটার ও ইন্টারনেট কানেকশন যদি থাকে তাহলে আমরা এই সব কেনা বেচার কাজ With in a second এর মধ্যে সেরে ফেলতে পারি পৃথিবীর যে কোন প্রান্তে বসে।
ই-কমার্স

ই-কর্মাস এর মাধ্যমে আমরা শুধু পন্য কেনা বেচায় নয় অর্থ লেনদেন তথ্য আদান প্রদান, থেকে শুরু করে সব ধরনের ট্রানজেকশন এর কাজ আমরা সহজেই করে ফেলতে পারি। আমাদের একটা মূল্যবান সময় আমারা ব্যায় করি পন্য ক্রয়ের পেছনে ই-কর্মাস সেই সময়টা আমাদেরকে বাঁচিয়ে দিয়েছে। যদিও ই-কর্মাস বিষয়টা বাংলাদেশ নতুন এবং money transaction করাটা ও কঠিন তারপরও যেহেতু শুরু হয়েছে অচিরেই সমস্ত সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।

কারন World এ গত এক দশকে যে বিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগ হয়েছে এবং হচ্ছে তা অন্য কোন ব্যাবসা ক্ষেত্রে হয়নি। International Data Corp এর হিসাবে ২০০০ সালে World এ e-commerce এর জন্য বিনিয়োগ ছিল ৩৫০ বিলিয়ন ডলার। সেটা বৃদ্ধি পেয়ে ২০০৮ এ এসে দাড়িয়েছিল ৭.১৪ ট্রিলিয়ন ডলারে IDC এর মতে এশিয়াতে ২০০০ সালে ছিল ৫% সেটা বৃদ্ধি পেয়ে ২০০৮ সালে ৫০% দাড়িয়েছিল।

সুতরাং ই-কর্মাস ভবিষ্যত কেমন হবে উপরোক্ত ছবিটা দেখলেই বুঝা যাই। আর বাংলাদেশে ইকর্মাস এর ব্যাবহার সবেমাত্র শুরু হয়েছে। সুতরাং এর
ভবিষ্যতও খুবই উজ্জল।

কেন ই-কমার্স?

ই-কর্মাস এমন একটি মিডিয়া যার মাধ্যমে Communication এবং digital infomaton processing techonology ব্যবহার করে একটি ব্যাবসার সম্পুর্ণ ট্রানজেকশন সিস্টেম তৈরি করা যায় ফলে একটি প্রতিষ্ঠানের সাথে অপর একটি প্রতিষ্ঠান বা ব্যাক্তির সাথে ব্যাবসায়িক সম্পর্কের সৃষ্টি হয়। কেন ই-কর্মাস? মনে করেন ঢাকা শহরের গুলশান বা ধানমন্ডি এলাকায় আপনি একটি Chain Shop খুলতে চান তাহলে প্রথমেই আপনাকে একটি ভালো জায়গা খুজতে হবে, একটা গোডাউনের ব্যাবস্থা করতে হবে, কর্মকর্তা কর্মচারী নিয়োগ দিতে হবে বিভিন্ন ম্যানুফ্যাকচর, ভেন্ডর প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে মালামাল নেওয়ার জন্য চুক্তি করতে হবে এছাড়াও অনেক অনেক কাজ আছে যা আপনাকে করতে হবে সবচেয়ে বড় বিষয় এখানে হলো
Investment ।

আপনাকে এমন একটি প্রতিষ্ঠান দেওয়ার জন্য কয়েক কোটি টাকার ইনভেস্টমেন্ট করতে হবে আর এমনই একটি প্রতিষ্ঠান আপনি করে ফেলতে পারেন কোন খরচ চাড়াই। অসম্ভব? না এটাই সম্ভব। আর এই কাজটি সম্ভব করা যাবে আধুনিক প্রযুক্তির অন্যতম আবিস্কার ই-কর্মাস এর মাধ্যমে। এখন আপনি যদি ই-কর্মাস এপ্লিকেশন তৈরী করেন যেখানে আপনি একটি Chain Shop এর যাবতীয় সবকিছু করতে চান তাহলে সেটা সহজেই করতে পারবেন।

যাই হোক এখন আপনার যদি একটি ই-কর্মাস সাইট থাকে সেই সাইট এর মাধ্যমে আপনি আপনার পন্যকে কাস্টমারকে দেখাতে পারছেন বিক্রি ও করতে পারছেন এখানে আপনি একটি বিশেষ সুবিধা পাচ্ছেন তা হলো পৃথিবীর যে কোন প্রান্তের ব্যবহারকারী আপনার থেকে পন্য ক্রয় বিক্রয় করতে পারছে। যে কাজটি কোন নির্দিষ্ট জায়গাই ব্যাবসা প্রতিষ্ঠান দেওয়ার মাধ্যমে আপনি করতে পারতেন না। শুধু যে আপনি এর মাধ্যমে ক্রয় বিক্রয় করতে পারবেন তা কিন্তু না আপনি চাইলে একটি অকশন হাউজ ও করতে পারবেন।

যেখানে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তি তাদের পন্য কে বিক্রির জন্য তুলে ধরবে এবং একটি মূল্য তারা দিয়ে দিবে পন্যের সাথে এখন যারা ঐ পন্য কিনতে চাইবে তারা বিড করবে এবং ম্যাক্সিমাম প্রাইজ যে দিবে সে পন্যটি কেনার জন্য জয়ী হবে। এরপর পন্যটির সেলার আপনার সাথে যোগাযোগ করবে এবং পন্যটি আপনাকে সরবরাহ করবে। এখানে উলে-খ্য যে পন্য লেনদেনের জন্য আপনার অকশন হাউজ কাজ করবে না আপনি লাভবান হবেন যে ব্যক্তি পন্যটি বিক্রি করতে চাচ্ছে সেখান থেকে একটি পার্সেন্টেজ আপনি কেটে রাখবেন।

এমন সাইট এর উজ্জল উদাহরণ হলো ই-বে। আপনি এই সাইট টা থেকে একটু ঘুরেও আসতে পারেন www.ebay.com এখন আপনি যে কোন ট্রানজেকশন রিলেটেড ওয়েবসাইট খুব সহজেই বানাতে পারবেন আপনাকে যে কাজটি করতে হবে তা হলো সাইট মার্কেটিং । যদি আপনি আপনার সাইট এর মার্কেটিং টা ভালো ভাবে করতে পারেন তাহলে আপনি হয়ে যাবেন সফলকাম। একটা ই-কর্মাস সাইট হয়ে যেতে পারে আপনার জীবিকার প্রধান উৎস দরকার শুধু আপনার আগ্রহ চেস্টা এবং মেধা।

ই-কমার্স এর সুবিধা ও অসুবিধাঃ

নিচে ই-কমার্স এর সুবিধা ও অসুবিধা দেওয়া হলোঃ-

ই-কমার্স এর সুবিধাঃ

E-Commerce এর মাধ্যমে ব্যবসা করার অনেক সুবিধা আছে। প্রথম যে সুবিধা সেটা হলো পুরো একটা ব্যাবসা কে Automation করা যাই । আরও যে সুবিধা গুলো আছে তা নিম্নে বর্ণিত হলোঃ-

1. Geographical: E-Commerce-
এর অন্যতম সুবিধা হলো World এর যে কোন প্রান্তের যে কোন Internet ব্যবহার কারী এটা browse করতে পারে তাদের পছন্দ অনুযায়ী পন্য ক্রয় বিক্রয় করতে পারে।
2. Expand Customer Base: আপনি যদি আপনার Customer দের চাহিদা অনুযায়ী পন্য Purchase
করতে না পারেন তাহলে অন্য যেকোন Channel থেকে Purchase করতে পারবেন এতে করে আপনার Customer আপনার প্রতি সন্তুষ্ট থাকবে।
3. Neverclose: Customer যেকোন সময় আপনার Site Visit করতে পারবে সেটা রাতও হতে পারে বা বন্ধের দিনও হতে পারে ২৪ ঘন্টা আপনার Site সচল থাকবে।
4. Reduce marketing and advertising cost: যে কোন প্রতিষ্ঠানের প্রধান খরচের খাত হলো Marketing এবং Advertising বিভাগ। আপনি বিনা খরচেই Internet এ আপনার Site এর Marketing বা প্রচার করতে পারবেন।
5. Reduce Paperbased work: সরাসরি কোন পন্য বিক্রি করতে গেলে তার হিসাব পত্র সবকিছুই কাগজে লিখে রাখা লাগে আর এসবের জন্য আলাদাভাবে কর্মচারীও নিয়োগও দেওয়া লাগে। কিন্তু ই-
কমার্স এ সবকিছুই electromic processing system হওয়াই আপনার সময় এবং খরচ দুটিই বেচে যাবে।
এছাড়াও আরও যে সুবিধা গুলো আছে। তাহলোঃ
১। আপনি আপনার ইচ্ছা মতো যতো খুশি পন্য আপনার Site এ Add করতে পারবেন।
২। E-Commerce business টা অনেক Cheapest অন্যান্য ব্যবসার চেয়ে।
৩। ব্যবসার মান উন্নয়ন করা যায়।
৪। দিন দিন যেভাবে Market গুলোতে লোক সমাগম বাড়ছে রাস্তা ঘাটে যানযটের পরিমান যেভাবে বাড়ছে এতে করে মানুষ এখন Internet থেকে পন্য ক্রয়ের প্রতি বেশি আগ্রহ দেখাচ্ছে। সুতরাং এটা একটা অনেক বড় কারণ এবং সুবিধা ই-কমার্স Business এর জন্য।
৫। দ্রুত পণ্য ভোক্তার কাছে পৌঁছায়।
৬। এছাড়া E-Commerce এর User রা খুব অল্প সময়ে পন্য কিনতে পারে এবং তারা খুব সহজেই Decision নিতে পারে।
৭। ই-কমার্সের সাহায্যে যেকোনো প্রতিষ্ঠানের ব্যবসায়কে জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক বাজারে করানো যায়।
৮। ক্রেতা-বিক্রেতার মধ্যে সহজে সুসম্পর্ক তৈরি করে।
৯। তথ্যের বিনিময় ও ব্যবসায়িক কার্যক্রম দ্রুত সম্পন্ন করা যায়।
১০। তথ্যের নির্ভুলতা ও গ্রহণযোগ্যতা বৃদ্ধি পায়।
১১। ব্যবসায়িক কার্যক্রমের খরচ ব্যাপকভাবে কমায়।
১২। পণ্য ও সেবার মান উন্নয়ন করা যায় ইত্যাদি।

ই-কমার্সের অসুবিধাঃ

১। ই-কমার্স পরিচালনায় দক্ষ লোকের অভাব দেখা যায়।
২। ক্রেতা বা বিক্রেতা অনেক সময় ই-কমার্সের কার্যক্রমের ওপর বিশ্বাস স্থাপন করতে পারে না।
৩। আর্থিক লেনেদেনে নিরাপত্তার অভাব পরিলক্ষিত হয়।
৪। বিক্রয় প্রতিষ্ঠান অনেক ক্ষেত্রে বিশেষ ওয়েব সার্ভার ব্যবহার করে থাকে, যা সব সময় পাওয়া যায় না।
৫। যান্ত্রিক সমস্যা দেখা দিলে পুরো প্রক্রিয়ার ওপর ব্যাপক প্রভাব পরিলক্ষিত হয়।
৬। পণ্যের মানের ক্ষেত্রে গ্যারান্টি প্রদান করা হয় না ইত্যাদি।

ই-কমার্সের ধারণাঃ

বাণিজ্য বলতে বোঝায় উৎপাদিত পণ্য বা সেবা ভোক্তার হাতে পৌঁছে দেয়া। যদি ইন্টারনেটের মাধ্যমে পণ্য বা
সেবা ভোক্তার হাতে পৌঁছানো হয় তবে তাকে ই-কমার্স বলা হবে। সাধারণ অর্থে, ইলেকট্রনিক মাধ্যম ব্যবহার করে পণ্য ক্রয়-বিক্রয় কার্যক্রম সম্পাদন করাকে ই-কমার্স বলা হবে। অর্থাৎ পণ্য বা সেবার বাণিজ্য যখন অনলাইন পদ্ধতিতে ঘটে তখন সেটি ই-কমার্স নামে পরিচিতি পায়। ব্যাপক অর্থে, বিশ্বব্যাপী ই-কমার্সকে পণ্য বা সেবা ক্রয়-বিক্রয়ের কার্যাবলি হিসেবে বিবেচনা করা হলেও পণ্য বা সেবা উৎপাদনের পর থেকে ক্রেতা বা ভোক্তার নিকট পৌছানোর যাবতীয় কার্যাবলি যেগুলো ইন্টারনেটের মাধ্যমে সম্পাদিত হয় তার সমষ্টিও ই-কমার্স বলে বিবেচিত হয়।

ই-কমার্সের পদ্ধতিঃ

বিশ্বকে অনলাইন বাজারে পরিণত করার প্রক্রিয়া অনেক আগেই চালু হয়েছে। যার ফলশ্রুতিতে ভৌগোলিক গন্ডি পেরিয়ে খুব সহজে আন্তর্জাতিক বাজার এখন অনলাইন বাজারের রূপ নিয়ে ব্যবসায়িক কার্যক্রম আরও সহজতর করছে। ই-মার্কেটারদের মতে ই-কমার্সের প্রভাবে বিশ্বের ভৌগোলিক অঞ্চলের দৃশ্যপট অনেকটা প্রযুক্তিসম্মত হয়েছে। প্রতিটি ব্যবসায়ের নিজস্ব ধরন ও প্রকৃতি রয়েছে, আর তার ওপর নির্ভর করে উক্ত ব্যবসায়ের বিনিয়োগ, লাভের পরিমাণ ইত্যাদি।

বাংলাদেশে ই-কমার্সঃ

বিশ্ব যেখানে ই-কমার্সের মাধ্যমে আকাশ ছোঁয়া স্বপ্নকে সত্যে বাস্তবায়িত করছে তখনও বাংলাদেশ প্রচলিত পদ্ধতিতে শম্বুক গতির ন্যায় ব্যবসায় বাণিজ্য পরিচালিত করে যাচ্ছে। প্রতিযোগিতায় টিকে থাকলে হলে প্রতিযোগীদের কাছাকাছি আসতে হবে। বাংলদেশ এদিক দিয়ে অনেক পিছিয়ে আছে। এর কারণ বহুবিধ। সরকারি সহযোগিতা থেকে শুরু করে দক্ষ লোকের অভাব কোনটাকেই বাদ দেওয়া যেতে পারে না। ই-কমার্সের মাধ্যমে বাংলাদেশ প্রভূত উন্নয়ন সাধনের পাশাপাশি বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনে যুগান্তকারী সাফল্য পেতে পারে।

কিন্তু সার্বিকভাবে কার্যকর সরকারি কোন পদক্ষেপ এ ক্ষেত্রে নেয়া হয়নি বললেই চলে। বিশ্ববাজারে বাংলাদেশের যেসব পণ্যের চাহিদা ছিল এবং এখনো আছে তা প্রতিযোগিতার কারণে দিনকে দিন কম যাচ্ছে। ই-কমার্সের মাধ্যমে এসব পণ্যকে বিশ্ব দরবারে হাজির করা সম্ভব। পণ্যের কার্যকারিতা, বৈশিষ্ট্য ও মূল্য সম্পর্কে ক্রেতাদেরকে আকৃষ্ট করে আমাদের দেশের পণ্যকে বিদেশের বাজারে সুপরিচিত করা সম্ভব। এ জন্য কার্যকরী পদক্ষেপ খুব দ্রুত নিতে হবে হয় সরকারিভাবে, না হয় বেসরকারি উদ্যোগে। নতুবা খুব শীঘ্রই বাংলাদেশ তার পণ্যের বিশ্ববাজার হারাবে।

বাংলাদেশের কিছু মৌলিক পণ্য রয়েছে যা দামে খুবই সস্তা। পণ্যের মান ঠিক রেখে যদি কম দামে পণ্য বাজারে প্রবেশ করানো যায় তাহলে বাংলাদেশের জন্য খুব ভালো একটি বিশ্ব বাজার অপেক্ষা করছে। এখানে উল্লেখ করা প্রয়োজন, বাংলাদেশের গার্মেন্টস শিল্প বিশ্ব বাজারে নন্দিত। কিন্তু কিছুকাল ধরে অন্যান্য দেশের দাপটের কাছে দিনে দিনে আমরা হার মানছি। কিন্তু এ শিল্পে আমাদেরও দাপট থাকার কথা। ই-কমার্সের মাধ্যমে গামেন্টস শিল্পকে আবারো জাগিয়ে তোলা সম্ভব।

পুরোপুরিভাবে ই-কমার্স বাণিজ্য বাংলাদেশের কোনো প্রতিষ্ঠানই শুরু করতে পারেনি, কিছু কিছু প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তি স্থানীয় উদ্যোগে ওয়েব সাইটের মাধ্যমে আংশিকভাবে ই-কমার্স শুরু করেছে। যারা শুরু করেছে তাদেরকে সার্বিক সহযোগিতার পাশাপাশি অন্যান্যদেরকেও এ পদ্ধতিতে ব্যবসায় করার জন্য অনুপ্রাণিত করা উচিত।

বিশ্ব বাজারে যে বিষয়টির একটি বড় ঘাটতি রয়েছে তা হচ্ছে তথ্য প্রযুক্তিতে দক্ষ লোকের অভাব। কিছুকাল ধরেই লক্ষ করা যাচ্ছে, বাংলাদেশ এ ক্ষেত্রে এগিয়ে আসছে। অবকাঠামোগত সমস্যা ও পৃষ্ঠপোষকতার অভাবে এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশ মেরুদণ্ড শক্ত করে দাঁড়াতে পারছে না ঠিকই কিন্তু আশার কথা হচ্ছে শিক্ষিত মহল তথ্য প্রযুক্তিকে উন্নয়নের চাবি হিসেবে আখ্যায়িত করে এগিয়ে আসছে।

এর ভালো উদাহরণ হচ্ছে সফটওয়্যার শিল্পে বাংলাদেশের অগ্রগতি। এ শিল্পে বাংলাদেশের সাফল্য পাবার একটি ভালো সম্ভাবনা রয়েছে। বিদেশি ক্রেতাদের সাথে লেনদেন করতে হলে এ শিল্পকে ই-কমার্সের মধ্যে আনয়ন করা ছাড়া আর কোনো ভালো পদ্ধতি নেই। সে সাথে উন্নত সেবা প্রদানের জন্য টেলিকম অবকাঠামো উন্নয়নের পাাাপাশি ই-কমার্স বিষয়ক আইন প্রণয়ন করাও খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

এতক্ষণ শুধু বৈদেশিক বাণিজ্যকে রক্ষার্থে আলোচনা করা হয়েছে। কিন্তু অভ্যন্তরীণ ব্যবসায় বাণিজ্যের ক্ষেত্রেও ই-কমার্স চালু করে ব্যবসায়ীরা লাভবান হওয়ার পাশাপাশি গ্রাহক বা ক্রেতা সেবার মান আরও উন্নত করা সম্ভব। সেবামূলক প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে ই-কমার্স অভ্যন্তরীণভাবে সবচেয়ে বেশি সফল হতে পারবে।

ইতিমধ্যে বই বিক্রি, ইলেকট্রনিক বিয়ে (ই-বিয়ে) ইত্যাদি ক্ষেত্রে ওয়েব সাইটের মাধ্যমে ই-কমার্স বাণিজ্য শুরু হয়েছে। আশা করা যাচ্ছে এর সংখ্যা আরও বেড়ে যাবে। ই-কমার্স পদ্ধতিতে বাংলাদেশের ব্যবসায় সবচেয়ে বড় অন্তরায় হয়ে দাঁড়িয়েছে ব্যাংকিং দুর্বলতা, ক্রেডিট কার্ডের স্বল্প ব্যবহার, টেলিকম সেক্টরের দুর্বলতা ইত্যাদি।

আরও পড়ুনঃ অনলাইন ব্যবসা কি? অনলাইন ব্যবসা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা

ই-কমার্সের প্রকারভেদঃ

ব্যবসায় থেকে ভোক্তা এবং ব্যবসায় থেকে ব্যবসায় সম্পর্কে বলতে পারবেন। ভোক্তা থেকে ব্যবসায় এবং ভোক্তা থেকে ভোক্তা কী বলতে পারবেন। ভোক্তা স্বার্থ ব্যাখ্যা করতে পারবেন। ই-কমার্স ইন্টারনেটের মাধ্যমে তার কার্যক্রম পরিচালনা করছে। বিশ্বের প্রায় ২০০ টিরও বেশি দেশ ইন্টারনেটের সাথে সম্পৃক্ত।

যে দেশে টেলিযোগাযোগ রয়েছে সে দেশেই এ ব্যবসায় পরিচালনা করা সম্ভব। ই-কমার্সকে মূলত চারভাগে ভাগ করা হয়েছে। পণ্যের লেনদেন ও এর প্রকৃতির ওপর ভিত্তি করেই এ শ্রেণিবিভাজন। যথাঃ-

১. ব্যবসায় থেকে ভোক্তা (Business to Consumer: B2C)

২. ব্যবসায় থেকে ব্যব্যসায় (Business to Business: B2B)

৩. ভোক্তা থেকে ব্যবসায় (Consumer to Business: C2B)

৪. ভোক্তা থেকে ভোক্তা (Consumer to Consumer: C2C)

ব্যবসায় থেকে ভোক্তাঃ

ব্যবসায় থেকে ভোক্তা পদ্ধতির ব্যবসায়টি B2C নামে সর্বাধিক পরিচিত। ব্যবসায় থেকে ভোক্তা সংক্রান্ত ব্যবসায়ের দ্রুত প্রসার ঘটে ১৯৯২ সাল থেকেই যখন ইন্টারনেটকে ব্যবসায়ের একটি সফল পথ হিসেবে ব্যবহার করা শুরু হয়। সাধারণত ভোক্তারা সরাসরি ব্যবসায়ী বিশেষত উৎপাদনকারীর নিকট থেকে পণ্য ক্রয় করার সুবিধা কম পেয়ে থাকে। এ পদ্ধতিতে একজন ক্রেতা সরাসরি ব্যবসায়ী বা উৎপাদনকারীর নিকট পৌঁছাতে পারে এবং তারা তাদের চাহিদানুযায়ী পণ্য ক্রয় করতে পারে।

সোজাভাবে ভোক্তাগণ যখন ই-কমার্সের মাধ্যমে কোন পণ্য ক্রয় করে তা ব্যবসায়ীর নিকট থেকে হোক কিংবা উৎপাদনকারীর নিকট থেকেই হোক তাকে B2C ব্যবসায় বলে। এ পদ্ধতিতে একজন ভোক্তা পৃথিবীর যে কোনো দেশ থেকে পণ্য ক্রয় করতে পারে। যেমন- একজন বাংলাদেশি বাংলাদেশে বসে ইউরোপ বা আমেরিকার যে কোনো দেশের বাজারে বিচরণ করতে পারে ওয়েব সাইটের মাধ্যমে এবং তার চাহিদামতো দ্রব্য বা পণ্য ক্রয় করতে পারে। এ পদ্ধতিতে ভোক্তা যেমন সুবিধা ভোগ করতে পারে তেমনি ব্যবসায়ীও হতে পারে লাভবান।

তাই ইন্টারনেটের মাধ্যমে ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা যেমন বাড়ছে তেমনি বাড়ছে ভোক্তার সংখ্যাও। এ পদ্ধতিতে ভোক্তা অনেক পণ্য যাচাই করে তুলনামূলকভাবে কম মূল্যে ও কম সময়ে ক্রয় করতে পারছে। উৎপাদনকারীর দিক থেকে চিন্তা করলে এ ব্যবস্থাটি খুব একটা সুবিধাজনক নয়।

কোনো উৎপাদনকারী পণ্যের মূল্য সামান্যতম পরিবর্তন করলেই অর্থাৎ বৃদ্ধি করলে ক্রেতা হাতছাড়া হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। ক্রেতা সাধারণকে হাতে রাখতে হলে সরবরাহ ব্যবস্থা উন্নত হতে হবে। সময়মত নির্দিষ্ট পণ্য অবশ্যই ভোক্তার দ্বারে পৌছাতে হবে।

আরও পড়ুনঃ ক্লাউড কম্পিউটিং কী? ক্লাউড কম্পিউটিং সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা

ব্যবসায় থেকে ব্যবসায়ঃ

একাধিক সংগঠন যখন একসাথে সংগঠিত হয়ে ই-কমার্সের মাধ্যমে ব্যবসায় পরিচালনা করে তখন তাকে ব্যবসায় থেকে ব্যবসায় সংক্ষেপে B2B বলে । প্রচলিত পদ্ধতিতে দেখা যায় দুটি ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান পরস্পরের মধ্যে বেচাকেনা করে। ব্যবসায় থেকে ব্যবসায় পদ্ধতি ঠিক তারই অনুরূপ। এখানে বিভিন্ন ধরনের পক্ষ থাকতে পারে। যেমনঃ- উৎপাদনকারী, সরবরাহকারী ইত্যাদি। অর্থাৎ, ভোক্তার নিকট পণ্য পৌঁছানোর পূর্ব পর্যন্ত প্রতিষ্ঠানের সাথে আরেকটি প্রতিষ্ঠানের মধ্যস্থিত ব্যবসায়িক লেনদেনই হচ্ছে ব্যবসায় থেকে ব্যবসায় পদ্ধতি।

ভোক্তাদের সংখ্যা ই-কমার্সের যেমন বাড়ছে ঠিক তেমনি প্রতিষ্ঠানের সাথে প্রতিষ্ঠানের ব্যবসায়িক লেনদেনে ই-কমার্সের চাহিদাও অনেক বাড়ছে। কারণ এতে ব্যবসায়িক সুবিধা ছাড়াও অন্যান্য সুবিধা বিদ্যমান। বিগত কয়েক বছরে দেখা গেছে, ই-কমার্সে এ ধরনের ব্যবসায়ের পরিমাণ গড়ে প্রায় ৭০% বেড়েছে। ব্যবসায়িক সম্পর্ক তৈরির ক্ষেত্রে ই-কমার্স একটি কার্যকরী ভূমিকা পালন করছে। এক্ষেত্রে সময় অনেক কম লাগছে, যেমন- 5M Infotech Limited বাংলাদেশি একটি সফটওয়্যার শিল্পপ্রতিষ্ঠান।

তারা তাদের কার্যক্ষেত্র আরও ব্যাপক ও প্রসারের জন্য জার্মানির Verbata Communication-এর সাথে যৌথভাবে কাজ করতে চাচ্ছে। এক্ষেত্রে চুক্তি সম্পাদনের জন্য যাওয়া-আসায় সময় অনেক লেগে যাবে। এখানে দুপক্ষই ই-মেইলের মাধ্যমে চুক্তিবদ্ধ হতে পারে এবং চুক্তি শেষে যৌথভাবে ওয়েব সাইটের মাধ্যমে ব্যবসায়িক কার্যসম্পাদন করতে পারে।

এটা এক রকম একই সারিতে পাশাপাশি অবস্থানের মতো। সেবামূলক প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে ই-কমার্সের মাধ্যমে ব্যবসায় থেকে ব্যবসায় পদ্ধতির ব্যবসায় সবচেয়ে বেশি লাভজনক। কারণ অনেক সময় বেশিরভাগ সেবাই ইন্টারনেটের মাধ্যমে দিয়ে দেওয়া সম্ভব হচ্ছে।

আরও পড়ুনঃ কম্পিউটার কি? কত প্রকার ও কি কি? কম্পিউটার সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা

ভোক্তা থেকে ব্যবসায়ঃ

এ পদ্ধতিকে ব্যবসায়ের একটি নতুন দিক বলা চলে । অতীতে এ ধরনের ব্যবসায় চালু ছিল কিন্তু তা প্রচলিত ব্যবসায় পদ্ধতিতে খুব একটা প্রভাব ফেলতে পারেনি। ই-কমার্সে এ পদ্ধতির প্রসার কিছুটা বাড়ছে। এ ধরনের ব্যবসায়াতে ব্যবসায়ীগণ ভোক্তার কাছ থেকে অফার গ্রহণ করে। এখানে ভোক্তা ব্যবসায়ীকে অফার করে কী মূল্যে পণ্য সরবরাহ করা উচিত বা কী ধরনের পণ্য ভোক্তা চায়। যে কোনো প্রতিষ্ঠানের জন্য এটি একটি বড় বিষয়।

প্রতিষ্ঠানকে অবশ্যই ভোক্তাকে প্রাধান্য দিতে হবে। ধরা যাক, একটি সেমিনারের জন্য ভোক্তার ৫০০ কলমের প্রয়োজন এবং এ ভোক্তারা প্রায়শই এ ধরনের সেমিনারের আয়োজন করে। এখন ভোক্তা কলম উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান বা সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানকে অনুরোধ জানাল, তারা যদি প্রতি কলম ৩ টাকা দরে দিতে পারে তাহলে ভোক্তারা প্রতিটি সেমিনারে কলম সরবরাহের দায়িত্বটি তাদেরকে দিবে।

সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান যদি এ লেনদেনে রাজি হয় তাহলে এক ভোক্তা থেকে ব্যবসায় পদ্ধতির ব্যবসায় বলা হবে। পৃথিবীর কয়েকটি দেশেই এ রকম ব্যবসায়ের উদাহরণ রয়েছে। প্রতিষ্ঠানগুলোও সর্বদা ভোক্তাদের প্রাধান্য দিতে প্রস্তুত। এ পদ্ধতিতে ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান খুব সহজেই ভোক্তার কাছাকাছি আসতে পারে এবং তাদের রুচি, চাহিদা ও মূল্য সম্পর্কে জানতে পারে।

আরও পড়ুনঃ কম্পিউটার এর ব্যবহার সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা

ভোক্তা থেকে ভোক্তাঃ

ই-কমার্সের সর্বশেষ পদ্ধতিটি হলো ভোক্তা থেকে ভোক্তা পদ্ধতি যাকে সংক্ষেপে C2C বলে। এখানে ভোক্তা তাদের প্রয়োজন মেটাতে ভোক্তার কাছে উপস্থিত হয়। এখানে কোনো মধ্যস্থতাকারী প্রতিষ্ঠান থাকে না। এ ব্যবসায়ের প্রসার ততটা লক্ষ করা না গেলেও এর চাহিদা হাঁটিহাঁটি পা পা করে এগুচ্ছে। ধরা যাক, একজন ব্যক্তি বিভিন্ন জায়গা থেকে আসবাবপত্র ক্রয় করেন এবং সেগুলো মেরামত করে আবার একই জায়গায় কিংবা অন্যত্র আবারও কম মূল্যে বিক্রয় করেন।

এখানে দেখা যাচ্ছে, ব্যক্তিটি ভোক্তার কাছ থেকে দ্রব্যটি কিনে আবার ভোক্তার কাছেই বিক্রয় করছেন। ব্যক্তি যখন নিজে দ্রব্যটি ক্রয় করছেন তখন সে ভোক্তা কিন্তু যখন দ্রব্যটি আবার বিক্রয় করছেন তখন সে আবার বিক্রেতা। ই-কমার্সের মাধ্যমে যখন এ ব্যবসায় বা কার্যটি সম্পাদিত হবে, তখন তাকে ভোক্তা থেকে ভোক্তা পদ্ধতিতে ব্যবসায় বলে অবহিত করা হবে।

আরও পড়ুনঃ  তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ১০ টি ব্যবহার

ভোক্তা স্বার্থঃ

দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য, ই-কমার্সের মাধ্যমে ভোক্তা যেমন লাভবান হচ্ছে ঠিক তেমনি অপ্রত্যাশিতভাবে জালিয়াতির মাধ্যমে ক্ষতিগ্রস্তও হচ্ছে। আন্তর্জাতিকভাবে এ সমস্যার সমাধান করার চেষ্টা বহুভাবে করা হয়েছে। কিন্তু কার্যক্ষেত্রে সমাধান করা যায়নি বললেই চলে। এর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করাও বেশ জটিল । আইনগত দিক থেকে আরেকটি জটিলতাও পরিলক্ষিত হয়। যেমনঃ- বাংলাদেশের একজন ভোক্তা নিজের দেশের আইন সম্পর্কে ধারণা নিয়ে অস্ট্রেলিয়ার একটি পণ্য ই-কমার্সের মাধ্যমে ক্রয় করতে আগ্রহী।

কিন্তু তার দেশের আইন অস্ট্রেলিয়ায় প্রযোজ্য না ও হতে পারে। সুতরাং ই-কমার্সের জন্য আলাদাভাবে আইন প্রণয়ন ও ভোক্তার সার্বিক নিরাপত্তার ব্যবস্থা নিশ্চিত করা উচিত। এর মধ্যে কিছু ব্যবস্থা ব্যবসায়ীদের প্রতিযোগিতার মাধ্যমেই গড়ে ওঠতে পারে এবং কিছু ব্যবস্থার জন্য সরকারি ও বেসরকারি ব্যক্তিদের এগিয়ে আসা প্রয়োজন।

সারসংক্ষেপঃ ই-কমার্সকে মূলত চারভাগে ভাগ করা হয়েছে। সোজাভাবে ভোক্তাগণ যখন ই-কমার্সের মাধ্যমে কোনো পণ্য ক্রয় করে তা ব্যবসায়ীর নিকট থেকে হোক কিংবা উৎপাদনকারীর নিকট থেকেই হোক তাকে B2C ব্যবসায় বলে। একাধিক সংগঠন যখন একসাথে সংগঠিত হয়ে ই-কমার্সের মাধ্যমে ব্যবসায় পরিচালনা করে তখন তাকে ব্যবসায় থেকে ব্যবসায় সংক্ষেপে B2B বলে। ভোক্তা থেকে ব্যবসায়ে ব্যবসায়ীগণ ভোক্তার কাছ থেকে অফার গ্রহণ করে। এখানে ভোক্তা ব্যবসায়ীকে অফার করে কী মূল্যে পণ্য সরবরাহ করা উচিত বা কী ধরনের পণ্য ভোক্তা চায়। ই-কমার্সের সর্বশেষ পদ্ধতিটি হলো ভোক্তা থেকে ভোক্তা পদ্ধতি যাকে সংক্ষেপে C2C বলে। এখানে ভোক্তা তাদের প্রয়োজন মেটাতে ভোক্তার কাছে উপস্থিত হয়। এখানে কোনো মধ্যস্থতাকারী প্রতিষ্ঠান থাকে না।

ই-কমার্সের নিরাপত্তাঃ

ইলেকট্রনিক কমার্স যেহেতু আর্থিক লেনদেনের সাথে জড়িত সেহেতু এর নিরাপত্তা ব্যবস্থা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। লেনদেন ছাড়াও এক্সেক কন্ট্রোল, ভাইরাস ও গোপনীয়তা রক্ষাও প্রয়োজনীয় বিষয়। এক্সেস কন্ট্রোল করার জন্য বহুল প্রচলিত পাসওয়ার্ড বা আইডি নম্বর প্রদান, আইডি কার্ড বা কী (key) প্রদান, স্বাক্ষরকৃত ডকুমেন্ট ইত্যাদি পদ্ধতি ব্যবহার করা হচ্ছে। ক্রেতা যখনই ই-কমার্সে ব্যবসায়িক বা যে কোনো লেনদেন করছে তখন তার কাছ থেকে বিভিন্ন তথ্য গ্রহণ করা হচ্ছে; যেমন- ই-মেইল ঠিকানা, কার্ড নম্বর, তার নাম, ঠিকানা ইত্যাদি। এ সব তথ্য তৃতীয় কোনো ব্যক্তি পাক তা ক্রেতা হয়ত চান না।

এখন এ বিষয়ে যদি গোপনীয়তা রক্ষা করা না হয় তাহলে ক্রেতার জন্য কখনো তা সুখকর নয়। এ সব তথ্য প্রায়শই কেনাবেচা হচ্ছে যা স্বার্থ পরিপন্থী একটি বিষয়। এসব বিষয়ে আইনকানুন থাকা সত্ত্বেও তথ্য ক্রয়বিক্রয়ের বিষয়টি থেমে নেই। কম্পিউটার ভাইরাস শব্দটিই এখন একটি আতঙ্কের বিষয়। কম্পিউটার ব্যবহারকারীগণ এ বিষয়টি নিয়ে অনেকটা চিন্তিত। কম্পিউটার ভাইরাস হচ্ছে এমন এক ধরনের কম্পিউটার প্রোগ্রাম যা অন্য প্রোগ্রামকে আংশিক বা সম্পূর্ণভাবে নষ্ট করার উদ্দেশ্যে তৈরি করা হয়। ভাইরাস আক্রান্ত প্রোগ্রাম অন্য কম্পিউটারের প্রোগ্রামকে খুব সহজেই আঘাত হানতে পারে।

যদি আক্রান্ত প্রোগ্রামটি অন্য কম্পিউটারে স্থানান্তরিত বা ব্যবহার করা হয় তা হলেই ঐ কম্পিউটারটিও ভাইরাস দ্বারা আক্রান্ত হবে। কম্পিউটার ডিভাইস, যেমনঃ- ফ্লপি ডিস্কের মাধ্যমে এক কম্পিউটার থেকে আরেক কম্পিউটার ভাইরাস দ্বারা আক্রান্ত হয়। তাছাড়া ইন্টারনেটের মাধ্যমেও ভাইরাস কম্পিউটারকে আঘাত করতে পারে। সফটওয়্যার সিকিউিরিটি, ডেটা সিকিউরিটি, নেটওয়ার্ক সিকিউরিটি, ইলেকট্রনিক পেমেন্ট সিকিউরিটি এ সমস্ত বিষয়গুলো প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে কম্পিউটার ও ইন্টারনেটের সাথে জড়িত।

নেটওয়ার্ক সিকিউরিটি এ সকল বিষয়গুলোর মধ্যে অন্যতম। ফায়ারওয়াল (Firewall) ব্যবহারের মাধ্যমে নিরাপত্তার বিষয়টি কিছুটা নিয়ন্ত্রণে রাখা হয়। ফায়ারওয়াল মূলত অথারাইজড নয় এমন কম্পিউটার ব্যবহারকারীর প্রবেশাধিকার নিয়ন্ত্রণ করে।

সারসংক্ষেপঃ ইলেকট্রনিক পেমেন্ট সিস্টেম ই-কমার্সের জন্য অত্যাবশ্যকীয়। ইন্টারনেট বা নেটওয়ার্কের মাধ্যমে অর্থের লেনদেনই হচ্ছে ইলেকট্রনিক পেমেন্ট সিস্টেম। ১৯৭০ সালের দিকে ইলেকট্রনিক লেনদেন পদ্ধতি ইলেকট্রনিক ফান্ড ট্রান্সফার নামে পরিচিতি লাভ করে। এ পদ্ধতিটি তথ্য নির্ভর ও অদৃশ্য একটি পদ্ধতি। একে তিনটি ভাগে ভাগ করা যায়। ব্যাংকিং ও আর্থিক লেলদেন, অনলাইন ইলেকট্রনিক পেমেন্ট এবং খুচরা লেনদেন। ই-কমার্স পদ্ধতির জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ যে পদ্ধতিটি তা হচ্ছে অনলাইন ইলেকট্রনিক পেমেন্ট সিস্টেম।

আরও পড়ুনঃ ইন্টারনেট কি? ইন্টারনেট সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url