টিভি পিকচার টিউব সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা

সাদা-কালো ও রঙিন পিকচার টিউবের নামঃ

সাদা-কালো পিকচার টিউবকে মনোক্রম পিকচার টিউব বলে। রঙিন পিকচার টিউব ইলেকট্রন গানের গঠন অনুসারে তিন প্রকার। যথাঃ

(১) ডেল্টা গান

(২) ইন-লাইন গান

(৩) সনি ট্রিনিট্রন গান।

টিভি পিকচার টিউব সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা

পিকচার টিউবের বিভিন্ন অংশের নামঃ

সাদা-কালো পিকচার টিউবের বিভিন্ন অংশের নামঃ

১. গ্লাস ইনভেলাপ

২. ইলেকট্রন গান

৩. ডিফ্লেকশন

৪. ফসফর স্ক্রিন

৫. ফেইস প্লেট

৬. বেইজ

রঙিন পিকচার টিউবের বিভিন্ন অংশের নামঃ

১. গ্লাস ইনভেলাপ

২. ইলেকট্রন গানসমূহ (লাল, নীল ও সবুজ)

৩. ডিফ্লেকশন ইয়োক

৪. স্যাডো মাস্ক

৫. গ্লাস ফেস প্লেট

৬. ফসফর ডট স্ক্রিন (লাল, নীল ও সবুজ)

৭. বেজ

পিকচার টিউবের সাথে সংযুক্ত অন্যান্য পার্টসের নামঃ

১. কনভারজেন্স ম্যাগনেট

২. ব্লু-ম্যাগনেট

৩. পিউরিটি রিং

৪. ডিফ্লেকশন ইয়োক।

আরও পড়ুনঃ কম্পিউটার এর ব্যবহার সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা

একটি সাদা-কালো পিকচার টিউবের গঠনঃ

হিটার, ক্যাথোড, অ্যাক্সিলারিটিং গ্রিড, ফোকাসিং গ্রিড, অ্যানোড, ডিফ্লেকশন কয়েল, ফসফরকোটিং স্ক্রিন ইত্যাদির সমন্বয়ে সাদা-কালো পিকচার টিউব গঠিত হয়। নিম্নে একটি সাদা-কালো পিচকার টিউবের গঠন চিত্র অঙ্কন করে কার্যপ্রণালি বর্ণনা করা হলোঃ

টিভি পিকচার টিউব
চিত্রঃ সাদা-কালো পিকচার টিউব।

ইলেকট্রন গান সেকশনের হিটারের ফিলামেন্টের সাহায্যে ক্যাথোডকে উত্তপ্ত করা হয়। ফলে ক্যাথোড থেকে ইলেকট্রন বিমের উৎপন্ন হয়। উৎপন্ন ইলেকট্রন বিম বিভিন্ন গ্রিড এবং ডিফ্লেকশনের কয়েলের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রিত হয়ে অ্যানোডের সরবরাহকৃত হাইভোল্টেজ দ্বারা আকর্ষিত হয়ে স্ক্রিনে আঘাত করে। ফলে স্ক্রিনে আলো বিচ্ছুরিত হয়।

আরও পড়ুনঃ কম্পিউটার নেটওয়ার্ক কি? কত প্রকার ও কি কি? কম্পিউটার নেটওয়ার্ক সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা

PIL ও ট্রিনিট্রন কালার পিকচার টিউবের গঠন ও কার্যপ্রণালিঃ

রঙিন পিকচার টিউব মূলত সাদা-কালো পিকচার টিউবের মতোই তিনটি প্রধান অংশ নিয়ে গঠিত 1 তবে এর ইলেকট্রন গানের সংখ্যা তিনটি। এই তিনটি গান যথাক্রমে লাল, নীল এবং সবুজ রঙের কাজ করে। ইলেকট্রন গানের বিপরীত দিকের অংশ চতুষ্কোণ আকৃতির আয়তাকার ফসফরাস স্ক্রিনটি অবস্থিত। এটি লাল, নীল এবং সবুজ রঙের ফসফরাসের সমন্বয়ে গঠিত। ইলেকট্রন গান তিনটিতে উৎপন্ন ইলেকট্রন বিমসমূহ স্ক্রিনের অবস্থিত অ্যানোডের সরবরাহকৃত হাইভোল্ডেজ দ্বারা আকর্ষিত হয়ে স্ক্রিনে আঘাত করে।

অর্থাৎ স্ক্রিনটিকে স্ক্যানিং করে। স্ক্রিনটি লিউমিনেসেন্ট মেটারিয়ালস-এর প্রলেপ যুক্ত বলে ইলেকট্রন বিমের ইলেকট্রন স্ক্রিনে আঘাত করলে এটি হতে আলো বিচ্ছুরিত হয়। সম্পূর্ণ স্ক্রিনটিকে আলোকিত করা ইলেকট্রন বিমের সাহায্যে স্ক্যানিং করার জন্য পিকচার টিউবের গলায় ইলেকট্রোম্যাগনেটিক ডিফ্লেকশন পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়।

পিকচার টিউবের গ্রিড ক্যাথোড সার্কিটে ভিডিও সিগন্যাল সরবরাহ করা হয়, ফলে বিমের তীক্ষ্ণতা পরিবর্তিত হয়ে ছবির সংকেত আলো-ছায়ায় পরিবর্তনরূপে স্ক্রিনে উপস্থিত হয়, যা ছবির সৃষ্টি করে। এইভাবে পিকচার টিউব ভিডিও সিগন্যালকে ছবিতে রূপান্তরিত করে। এই পিকচার টিউবের ইলেকট্রন গান তিনটি সাধারনত দুইভাবে স্থাপিত থাকে। যথাঃ-

 (ক) ডেল্টা গান ব্যবস্থা এবং 

(খ) ইনলাইন গান ব্যবস্থা।

ডেল্টা গান ব্যবস্থায় গান তিনটি পরস্পর 120° কৌণিক দূরত্বে অবস্থান করে। ইনলাইন গান ব্যবস্থায় গান তিনটি পরস্পর একই সরলরেখায় অবস্থান করে।

টিভি পিকচার টিউব
চিত্রঃ কালার পিকচার টিউব।

কনভারজেন্স, পিউরিটি, ডিফ্লেকশন অ্যাডজাস্টঃ

কনভারজেন্সঃ কনভারজেন্স অর্থ এককেন্দ্রীভূতকরণ। কালার পিকচার টিউবে লাল, সবুজ এবং নীল এই তিনটি ইলেকট্রন বিমকে সমন্বয় করার পদ্ধতিকে কনভারজেন্স বলে।

পিউরিটিঃ কালার পিকচার টিউবের পর্দায় দুই বা ততোধিক প্রাইমারি কালারের মিশ্রিত রূপ ছাড়া স্ব স্ব কালারকে শতভাগ ফুটিয়ে তোলার মাধ্যমে সুন্দর ছবি পর্দায় পাওয়ার ব্যবস্থাকে কালার পিউরিটি বলে। এই কাজের জন্য একটি ম্যাগনেট ব্যবহার করা হয়, যাকে পিউরিটি ম্যাগনেট বলে।

ডিফ্লেকশন অ্যাডজাস্টঃ স্ক্যানিং কাজ সমাধা করার জন্য সাদা-কালো অথবা কালার পিকচার টিউবের গলায় ডিফ্লেকশন ইয়োক স্থাপন করা হয়। ডিফ্লেকশন ইয়োকে দুই জোড়া কয়েল থাকে। এক জোড়া হচ্ছে হরিজন্টাল ডিফ্লেকশন কয়েল এবং অপর জোড়া ভার্টিক্যাল ডিফ্লেকশন কয়েল। হরিজন্টাল কয়েল দ্বারা উপরে ও নিচে এবং ভার্টিক্যাল কয়েল দ্বারা ডানে-বামে ডিফ্লেকশন ঘটায়।

নিম্নে একটি ডিফ্লেকশন ইয়োক কয়েলের চিত্র অঙ্কন করে অ্যাডজাস্টমেন্ট বর্ণনা করা হলোঃ

টিভি পিকচার টিউব
চিত্রঃ হরিজন্টাল এবং ভার্টিক্যাল ওয়ান্ডিং-এর প্রস্থচ্ছেদ।

ডিফ্লেকশন ইয়োক অ্যাডজাস্টমেন্টের ক্ষেত্রে ইয়োকের উপরিভাগের উয়িং নাটকে হালকা করে খুলে ইয়োকটিকে ঘুরানো হয়। ইয়োকটি ডানে-বামে ঘুরিয়ে রাস্টারকে পর্দার সমান্তরালে অ্যাডজাস্ট করে উয়িং নাটটি টাইট করে লাগাতে হয়। ফলে তখন স্ক্রিনের পর্দায় সঠিকভাবে ছবিটি উপস্থাপিত হবে।

আরও পড়ুনঃ ক্লাউড কম্পিউটিং কী? ক্লাউড কম্পিউটিং সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা

ডিফ্লেকশন, ফোকাসিং, সেন্টারিং এবং কনভারজেন্সঃ

ডিফ্লেকশনঃ স্ক্যানিং কাজ সমাধান করার জন্য সাদা-কালো টিউবের মতোই এর গলায় ডিফ্লেকশন ইয়োক স্থাপন করা হয়। ব্লু ম্যাগনেট, পিউরিটি রিং এবং কনভারজেন্স ম্যাগনেটসহ ডিফ্লেকশন ইয়োকটি টিউবের গলায় স্থাপন করা হয়। ডিফ্লেকশন ইয়োকে ডানে বামে নাড়াচাড়া করে অ্যাডজাস্ট করা হয়।

ফোকাসিং এবং সেন্টারিংঃ ফোকাসিং মূলত এমন একটি প্রক্রিয়া যার মাধ্যমে ইলেকট্রন গান হতে নিক্ষিপ্ত ইলেকট্রনসমূহ সঠিকভাবে ফসফর স্ক্রিনের উপরে ফেলানো হয়। ফোকাসিং পদ্ধতি দুই প্রকার। যথাঃ

১। লেন্স ফোকাসিং সিস্টেম

২। ইলেকট্রো-ম্যাগনেটিক ফোকাসিং সিস্টেম।

কনভারজেন্সঃ কনভারজেন্স অর্থ এককেন্দ্রীভূতকরণ। কালার পিকচার টিউবে লাল, সবুজ এবং নীল এই তিনটি ইলেকট্রন বিমকে সমন্বয় করার পদ্ধতিকে কনভারজেন্স বলে।

আরও পড়ুনঃ কম্পিউটার হার্ডওয়্যার কি? কম্পিউটার হার্ডওয়্যার পরিচিতি

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url