কয়েকটি খুব সাধারণ রোগ ও তার ঘরোয়া প্রতিকার

কয়েকটি খুব সাধারণ রোগ ও তার ঘরোয়া প্রতিকার

সর্দিজ্বরঃ

সর্দি জ্বর সাধারণ ভাইরাসের সংক্রমণ। এই জ্বরকে ইনফ্লুয়েঞ্জা জ্বরও বলা হয়ে থাকে। ভাইরাস জ্বর হলে নাক দিয়ে পানি পড়ে, গলা ব্যথা হয়, কখনও কখনও জ্বর হয় এবং গাঁটে গাঁটে ব্যথা হয়। ছোট ছেলেমেয়েদের ক্ষেত্রে পাতলা পায়খানাও হয়। ইনফ্লুয়েঞ্জা জ্বর হলে সব সময় ওষুধের প্রয়োজন পড়ে না। ওষুধ ছাড়াই নির্দিষ্ট সময়ে ভাল হয়ে যায়। তবে ইনফ্লুয়েঞ্জা জ্বর যদি এক সপ্তাহের বেশি থাকে এবং কফ থাকে তবে ডাক্তারের পরামর্শ মতোএন্টিবায়োটিক খেতে হবে।

সর্দিজ্বর

ইনফ্লুয়েঞ্জা জ্বরে কিছু ঘরোয়া চিকিৎসাঃ

১। প্রচুর পানি পান করতে হবে এবং যথেষ্ট বিশ্রাম নিতে হবে।

২। প্যারাসিটামল ট্যাবলেট জ্বর নামাতে, গায়ের ব্যথা ও মাথাধরা কমাতে সাহায্য করে। কাজেই বেশি ওষুধ খেলে জ্বর তো ভাল হবেই না অযথা পয়সা নষ্ট হবে।

৩। সর্দিতে যদি নাক বন্ধ হয়ে থাকে তবে গরম পানির ভাপ নিতে হবে। এতে নাক, গলা সব পরিষ্কার হয়ে যাবে।

৪ । ভিটামিন ‘সি’ জাতীয় ফল, যেমন- কমলালেবুর রস, পাতিলেবুর রস ইত্যাদি ইনফ্লুয়েঞ্জা জ্বরের পথ্য।

সর্দি হলে কি করবেন?

১। সর্দি হলে ভিটামিন 'সি' যুক্ত ফল খেতে হবে, যেমন- কমলালেবু, টমেটো, আমলকী, পাতিলেবু ইত্যাদি।

২। অনেকে মনে করেন ভিজলে সর্দি হয়। কিন্তু এই প্রচলিত ধারণাটি ভুল। ভিজলে সর্দি হয় না- সর্দি বাড়ে। সংক্রমিত লোকের হাঁচির সাথে যে ভাইরাস বাতাসে ছড়ায় সেখান থেকেই সুস্থ লোকের সংক্রমণ ঘটে।

৩। ঘরে যদি কারও সর্দি থাকে তবে তাকে অন্যদের থেকে আলাদা করে শোয়াতে হবে । ছোট বাচ্চাদেরকে একটু বিশেষ সাবধানে রাখতে হবে।

৪ । গলা ব্যথা হলে বিশেষ ওষুধের প্রয়োজন নেই। গরম পানি দিয়ে কুলকুচা করলে ভাল হয়ে যায়। তবে জ্বরের সাথে যদি প্রচণ্ড গলাব্যথা হয় তবে ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী এন্টিবায়োটিকের ব্যবস্থা করতে হবে।

সাইনোসাইটিসঃ

আমাদের নাকের চারপাশে যে হাড়গুলো আছে, এই হাড়গুলোর মাঝে অনেক দিনের পুরনো প্রদাহ হলে তাকে সাইনোসাইটিস বলে।

লক্ষণ বোঝার উপায়ঃ

১। নাকে সব সময় ঘন সর্দি থাকে এবং পুঁজে নাক ভর্তি হয়ে থাকে । এই সর্দিতে গন্ধ ও থাকে।

২। চোখের ওপরের ও নিচের হাড়ে ব্যথা থাকে। হাঁটতে গেলে কিংবা ঝুঁকলে মাথায় ব্যথা লাগে ।

৩। ব্যথার সাথে অনেক সময় জ্বরও থাকে ।

প্রাথমিক চিকিৎসাঃ

১। নাক বন্ধ থাকলে তা সব সময় পরিষ্কার রাখতে হবে। ছোট ছেলেমেয়েদেরকে ড্রপার দিয়ে নাক পরিষ্কার করে দিতে হবে।

২। যে সব ছেলেমেয়েরা একটু বড় তারা লবণের পানি নাকে টেনে নিলে নাক পরিষ্কার হয়ে যাবে।

৩। গরম পানির ভাঁপ নিলেও নাক পরিষ্কার হয়।

৪। মুখের ওপরও গরম সেঁক নেওয়া ভাল।

৫। নাক দিয়ে পানি ঝরলে নাক না ঝেড়ে মুছে ফেলতে হবে। এরপর নাক পরিষ্কার করার ওষুধ দেওয়া যেতে।

৬। এরপরও যদি নাক পরিষ্কার না হয় তবে ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী এন্টিবায়োটিক খেতে হবে।

সাইনোসাইটিস

গলায় ব্যথা আর টনসিলের প্রদাহঃ

সাধারণ সর্দি জ্বর থেকে টনসিলের প্রদাহ শুরু হয়। প্রথমে সাধারণ গলাব্যথা থাকে, গলার ভেতরটা লাল থাকে এবং ঢোক গিলতে অসুবিধা হয়। টনসিলের ভেতরটা ফুলে যায়। টনসিলের প্রদাহ থেকে প্রচণ্ড জ্বর ওঠে। এক ধরনের টনসিল আছে যা মুখ গহ্বরের পেছনের দিকে জিহ্বার দুই দিকে অবস্থান করে। যা মুখ হা করলেই আমরা সবাই দেখতে পাই। আবার আরেক ধরনের টনসিল আছে যা নাকের পেছনে এবং গলার উপরিভাগে অবস্থান করে। এই টনসিল ইনফেকশন ২ থেকে ১০ বছরের শিশুদের মধ্যে বেশি হয়ে থাকে।

গলায় ব্যথা আর টনসিলের প্রদাহ

এই রোগের লক্ষণঃ

শিশুরা নাক দিয়ে শ্বাস নিতে পারে না বিধায় মুখ দিয়ে শ্বাস নিয়ে থাকে। খেতে গেলে অসুবিধা হয়। অনেকে খেতে গেলে অনীহা প্রকাশ করে এবং ঘুমোনোর সময় নাক ডেকে থাকে। অনেক সময় শিশুদের মুখ দিয়ে লালা নির্গত হয় ফলে শিশুদের মুখ শুকিয়ে যায়। শিশুর স্বাভাবিক বৃদ্ধিতে বাধাপ্রাপ্ত হয়। এ অবস্থায় শিশুরা কানে কম শোনে। এরা মনের দিক থেকে দুর্বল থাকে এবং স্মরণশক্তিও লোপ পেতে থাকে। এ ধরনের উপসর্গ দেখা দিলে মায়েদের উচিত অবশ্যই নাক, কান ও গলা রোগ বিশেষজ্ঞের স্মরণাপন্ন হওয়া। বেশি উপসর্গ দেখা দিলে অবশ্যই তাকে অপারেশন করিয়ে নিতে হবে।

টনসিলের ঘরোয়া চিকিৎসাঃ

এক গ্লাস গরম পানিতে এক চামচ লবণ দিয়ে কুলকুচা করতে হবে। ব্যথার জন্য ট্যাবলেট খেতে হবে। ব্যথা আর জ্বর হঠাৎ হলে এবং তিন দিনের বেশি হলে ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে হবে।

রিউম্যাটিক ফিভার (বাতজ্বর):

এই রোগ সাধারণত কমবয়েসী ছেলেমেয়েদের মধ্যে বেশি হয়ে থাকে। যাদের বার বার টনসিলের প্রদাহ হয় এদের বাতজ্বর হবার সম্ভাবনা থাকে। ঠাণ্ডা আবহাওয়া, ঘনবসতি, পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার অভাবে ছেলেমেয়েরা এ রোগে বেশি আক্রান্ত হয়।

লক্ষণঃ

১। বাতজ্বর হলে প্রায়ই জ্বর হতে দেখা যায়।

২। শরীরের গাঁটগুলো, যেমন- কব্‌জি, হাঁটু এবং কনুইয়ে ব্যথা দেখা যায়। গাঁটগুলো ব্যথা হয় এবং ফুলে যায় ।

৩। চামড়ার নিচে দলা দলা দেখা যায়।

৪। রোগী অত্যন্ত দুর্বল হয়ে যায় এবং বুকেও ব্যথা হতে পারে।

৫। রোগীর খাওয়ার রুচি কমে যায় এবং শরীরের ওজন দিন দিন কমতে থাকে।

চিকিৎসাঃ

বাতজ্বর হলে চিকিৎসকের পরামর্শ যত তাড়াতাড়ি সম্ভব নিতে হবে। নতুবা হার্টের ক্ষতি হতে পারে।

(ক) প্রয়োজনে কিছুদিনের জন্য পূর্ণ বিশ্রাম দরকার হতে পারে।

(খ) জ্বর ও ব্যথা দমনের জন্য প্যারাসিটামল খেতে দেওয়া যেতে পারে।

(গ) সাধারণ জনগণের স্বাস্থ্য সচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে।

(ঘ) স্কুলের ছাত্র ছাত্রীদেরকে মাঝে মধ্যে পরীক্ষা নিরীক্ষা করে দেখতে হবে এবং যাদের টনসিলাইটিস বা ফ্যারেনজাইটিস আছে এদের উপযুক্ত চিকিৎসা করতে হবে।

(ঙ) বাড়ি ঘর পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন ও স্বাস্থ্যসম্মত রাখতে হবে। নোংরা পরিবেশ বর্জন করতে হবে।

(চ) ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া অযথা Steroid জাতীয় ওষুধ খাওয়া যাবে না।

হাঁপানিঃ

হাঁপানি রোগীর যখন তখন শ্বাসকষ্ট শুরু হয়ে যায়। শ্বাস ছাড়ার সময় সাঁই সাঁই শব্দ হয়। হাঁপানি রোগী যখন শ্বাস নিতে যায় তখন রোগীর কণ্ঠার পেছনের আর পাঁজরের মাঝের চামড়া ভেতর দিকে ঢুকে যেতে পারে। যে জিনিসে কারও এলার্জি সেটা খেলে কিংবা শ্বাস প্রশ্বাসের সাথে যদি ভেতরে ঢোকে তবে হাঁপানি হতে পারে। হাঁপানি কোনও ছোঁয়াচে রোগ নয়। সাধারণত শীতকালে হাঁপানি বাড়ে এবং রাত্রি বেলাতেই এটি বেশি হয়। অনেকের সারাটা জীবনই হাঁপানির সমস্যা থেকে যায়। হাঁপানি হলে রোগী বাতাস থেকে যথেষ্ট পরিমাণে অক্সিজেন গ্রহণ করতে পারে না। ফলে রোগীর নখ ও ঠোঁট নীল হয়ে যায় এবং শিরা ফুলে ওঠে। হাঁপানি হলে রোগীর জ্বর থাকে না কিন্তু কাশির সঙ্গে কিছু সাদা কফ থাকে।

হাঁপানির চিকিৎসাঃ

১। কারও যদি ঘরের ভেতরে হাঁপানি বেড়ে যায়, তবে যেখানে মুক্ত এবং পরিষ্কার বাতাস আছে সেখানে রোগীকে নিয়ে যেতে হবে।

২। রোগীকে প্রচুর তরল জিনিস খেতে দিতে হবে এতে শ্লেষ্মা পাতলা হবে এবং গরম পানির ভাপ নিতে হবে।

৩। রোগীকে মানসিক ভাবে আশ্বাস প্রদান করতে হবে।

৪ । হাঁপানি হলে রোগীকে ঘুমের ওষুধ দেওয়া যাবে না।

৫ । রোগীর অবস্থা ভাল না হলে অবিলম্বে ডাক্তারী চিকিৎসা নিতে হবে।

ঘরোয়া প্রতিকারঃ

১। যে সব জিনিস খেলে হাঁপানি বাড়ে ঐ ধরনের জিনিস খাওয়া উচিত নয়।

২। বাড়ির আশে পাশে সব সময় পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে।

৩। রোগীর বিছানাপত্র সব সময় রোদে দিতে হবে।

৪। হাঁস, মুরগী, বিড়াল কুকুর কিংবা কোনও লোমওয়ালা প্রাণী যেগুলো থেকে হাঁপানির সৃষ্টি হয় সেসব প্রাণী থেকে দূরে থাকতে হবে।

কাশিঃ

কাশি কোনও নির্দিষ্ট রোগ নয়, গলা, ফুসফুস কিংবা শ্বাসনালীতে কোনও সংক্রমণ হলে কাশি হয়। বিভিন্ন ধরনের কাশি মানুষের হয়ে থাকে। যেমন- কফ সহ কাশি।ব্রঙ্কাইটিস নিউমোনিয়া হলে কাশির সাথে কফ থাকে। আবার কিছু কিছু কাশি আছে সেসব কাশি শুকনো। কাশির সাথে কোনও কফ থাকে না। সাধারণত ইনফ্লুয়েঞ্জা জ্বর হলে এ ধরনের কাশি হয় আবার যারা ধূমপান করেন এদেরও এরকম কফবিহীন খুশখুশে কাশি হয়। আবার আরেক ধরনের কাশি আছে যে কাশির সাথে সাঁই সাঁই বা ঘড় ঘড় টান আর শ্বাসকষ্ট হয়। সাধারণত হাঁপানি হলে, ডিপথেরিয়া হলে কিংবা হার্টের রোগ থাকলে এ ধরনের কাশি হয়।

কিভাবে কাশির প্রাথমিক চিকিৎসা করবেন?

১। কাশি হলে কফ যাতে পাতলা হয়ে যায় এজন্য প্রচুর পরিমাণে পানি পান করতে হবে।

২। গরম পানির ভাপে শ্বাস নিতে হবে। ভাপ নেবার পদ্ধতি হলো- একটি চেয়ারে বসে পায়ের কাছে এক বালতি গরম পানি রাখতে হবে। মাথার ওপরে একটি তোয়ালে দিয়ে ঢেকে দিতে হবে। পরে বালতি থেকে যে ভাপ উঠবে সেই ভাপটা গভীরভাবে নাক দিয়ে টেনে নিতে হবে। এইভাবে ১৫ মিনিট ধরে শ্বাস নিতে হবে। অথবা বেসিনের মধ্যে গরম পানি নিয়ে বেসিনের মুখ বন্ধ করেও এটি করা যেতে পারে। এই প্রক্রিয়ায় শ্লেষ্মা আলগা হয়ে যায়।

৩। রোগীর যদি শুকনো কাশি হয় এবং ঘুমোতে অসুবিধা হয় তবে ডাক্তারের পরামর্শ মতো ওষুধ খেতে হবে।

৪ । ধূমপান করা যাবে না। ধূমপান স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর।

৫। যে রোগের জন্য কাশি হচ্ছে তার কারণটা খুঁজে বের করতে হবে।

৬। কফ যদি খুব বেশি হয় তবে রোগীকে প্রথমে গরম পানির ভাপ নিতে বলতে হবে। এরপর রোগীকে উপুড় করে শুইয়ে দিতে হবে যেন মাথা ও বুক খাটের কিনারার বাইরে ঝুলে থাকে। এরপর পিঠের মধ্যে চাপড় দিতে হবে। এতে কফ তাড়াতাড়ি বেরিয়ে যাবে।

নিউমোনিয়াঃ

নিউমোনিয়া ফুসফুসের একটি তীব্র সংক্রমণ। সাধারণত ছোট শিশুদের নিউমোনিয়া বেশি দেখা যায়। এটি অত্যন্ত বিপজ্জনক। নিউমোনিয়া হলে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে মৃত্যুও ঘটতে পারে। ব্রঙ্কাইটিস, হাঁপানি কিংবা ইনফ্লুয়েঞ্জা থেকে অনেক সময় নিউমোনিয়া হয়ে যায়।

নিউমোনিয়ার লক্ষণ বোঝার উপায়ঃ

১। খুব কাশি হয়, কাশির সাথে সাঁই সাঁই করে শব্দ হয়, শ্বাস প্রশ্বাস খুব দ্রুত হয় ।

২। কাশি হলে কফের রঙ হয় হলুদ, সবুজ কিংবা রক্তের মতো লাল।

৩। রোগীর জ্বর খুব বেশি থাকে এবং রোগীকে খুবই অসুস্থ দেখায়।

৪। রোগী যখন শ্বাস প্রশ্বাস নেয় বা কাশি দেয় তখন রোগীর বুকে ব্যথা হয়।

৫। রোগী শ্বাস নেবার সময় নাকের ফুটো বড় হয়ে যায়। প্রতি মিনিটে যদি ৫০ বারের বেশি হালকা শ্বাস নেয় তবে হয়তো বোঝা যাবে যে তার নিউমোনিয়া হয়েছে।

প্রাথমিক চিকিৎসাঃ

১। রোগীকে প্রচুর তরল খাবার দিতে হবে। রোগী যদি খেতে অপারগ হয় তবে তরল জিনিস বা চিনি-লবণের সরবত দিতে হবে।

২। জ্বর এবং ব্যথা কমানোর জন্য প্যারাসিটামল দিতে হবে।

৩। রোগীকে গরম পানির ভাপ নিতে বলতে হবে। এতে রোগীর কাশি কমবে এবং কফও পাতলা হবে। উপুড় করে শুইয়েও কফ বের করা যাবে।

৪। চিকিৎসকের পরামর্শ মতো অতিদ্রুত এন্টিবায়োটিকের ব্যবস্থা করতে হবে।

ব্রঙ্কাইটিসঃ

আমাদের শরীরে যে সব নল দিয়ে ফুসফুসে বাতাস ঢোকে, তাদের সংক্রমণকে ব্রঙ্কাইটিস বলে। ব্রঙ্কাইটিস রোগটি সাধারণত ভাইরাস থেকে হয়। ব্রঙ্কাইটিস হলে রোগী খুব শব্দ করে কাশতে থাকে। ব্রঙ্কাইটিসের স্থায়িত্ব এক সপ্তাহের বেশি দিন ধরে চললে নিউমোনিয়া হয়ে যেতে পারে। তাই সহসাই চিকিৎসা করা উচিত। তুষার বর্ষিত এবং ধূলিময় পরিবেশ ও আবহাওয়ায় ব্রঙ্কাইটিস হতে পারে। ব্রঙ্কাইটিস দু'ধরনের। একটি তীব্র অন্যটি দীর্ঘস্থায়ী।

ব্রঙ্কাইটিসের লক্ষণ বোঝার উপায়ঃ

১। ব্রঙ্কাইটিস দীর্ঘদিন ধরে চলে। কাশির সাথে কফ থাকে। কাশির সাথে জ্বর থাকে এবং তা ১০৩° পর্যন্ত ওঠে।

২। এই কাশি ঘুরে ঘুরে প্রতি বছরই হয়। বছরের অন্তত ৩ মাস এ কাশি হতে পারে। রোগীর যদি হাঁপানি কিংবা যক্ষা না থাকে তবে বুঝতে হবে যে পুরনো ব্রঙ্কাইটিস।

৩। ধূমপান যারা করেন এদের এ রোগ হয়ে থাকে।

৪ । ব্রঙ্কাইটিস যদি খুব পুরনো হয়ে যায় তবে রোগীর শ্বাস নিতে বেশ কষ্ট হয়।

৫। বুকের ওপর গভীর ব্যথা অনুভব করে এবং দম নিতে কষ্ট হয়। শ্বাস ফেলার সময় গলায় শব্দ হতে পারে।

প্রাথমিক চিকিৎসাঃ

১। ধূমপান বন্ধ করতে হবে।

২। রোগীর যদি পুরনো ব্রঙ্কাইটিস থাকে, যদি তার সাধারণ সর্দি জ্বরও হয়ে থাকে তবে তাকে এন্টিবায়োটিক খেতে হবে।

৩। কাশির সাথে কফ থাকলে গরম পানির ভাপ নিতে হবে এবং বিশেষভাবে শুইয়ে কফ বের করতে হবে।

৪। প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার খেতে হবে।

৫। রোগীকে পূর্ণ বিশ্রাম দিতে হবে।

খুব বেশি জ্বর হলেঃ

যখন মানুষের শরীরের তাপ খুব বেশি হয় তখনই আমরা তাকে জ্বর বলে থাকি। জ্বর নিজে কোনও রোগ নয় তবে অনেকগুলো রোগের লক্ষণ। জ্বর যদি খুব বেশি হয় তবে বিপদ ঘটতে পারে।

খুব বেশি জ্বর হলে

বেশি জ্বর হলে করণীয়ঃ

১। গায়ের জামা কাপড় সব খুলে ফেলতে হবে।

২। রোগীকে স্পঞ্জ করতে হবে।

৩। স্পঞ্জ করতে হলে ঈষদুষ্ণ পানি নিতে হবে। এরপর একটি পরিষ্কার কাপড় পানিতে ভিজিয়ে প্রথমে হাত পরে পা এবং শেষে সমস্ত শরীর মুছে দিতে হবে। এভাবে যতক্ষণ পর্যন্ত জ্বর না কমবে ততক্ষণ পর্যন্ত শরীর মুছে যেতে হবে। শরীর মোছার পর পরই শুকনো তোয়ালে দিয়ে পানি মুছে ফেলতে হবে। স্পঞ্জ করার সময় মনে রাখতে হবে যেন রোগীর ঠাণ্ডা লেগে না যায়। মাথার ওপর একটু জায়গা জুড়ে বরফের ব্যাগ দিতে হবে। এতে রক্তবাহী শিরাগুলো সংকুচিত হয়।

৪। জ্বর হলে শরীরের ক্ষমতা অনেকাংশে কমে যায় তাই প্রয়োজন হলে স্যালাইন খেতে দেওয়া উচিত।

৫। প্রয়োজন অনুযায়ী প্যারাসিটামল খেতে দিতে হবে।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url