হঠাৎ কারো শ্বাসরোধ হলে করণীয়

হঠাৎ কারো শ্বাসরোধ হলে করণীয়

শ্বাসরোধঃ

বিভিন্ন কারণে শ্বাসরোধ হয়ে থাকে। কোনও দ্রব্য দ্বারা যদি শ্বাসনালী বন্ধ হয় তবে শ্বাসরোধ হয়ে থাকে।

শ্বাসরোধের কারণগুলোঃ

১। নিঃশ্বাসে অক্সিজেনের অভাব ঘটলে যেমন- কয়লা খনিতে, পুরনো কূপে।

২ খাদ্য দ্রব্য শ্বাসনালীতে আটকে গেলে।

৩। বাধানো দাঁত খুলে গলায় আটকে গেলে। বমি, রক্ত, মাংসের হাড়, মাছের কাঁটা ইত্যাদি গলায় আটকে গেলে ৷

৪। অজ্ঞান রোগী জিহ্বা উল্টে যদি পেছন দিকে পড়ে যায় তবে তার শ্বাস বন্ধ হয়ে যায়।

৫। পানিতে ডুবে গেলে।

৬।বৈদ্যুতিক শকের কারণে।

৭। দুর্ঘটনায় বুকে ক্ষত হলে।

৮ । গলা টিপে হত্যা করলে কিংবা গলায় দড়ি দিলে।

৯। বুকের ওপর কোনও ভারী বস্তুর চাপ পড়লে, বুকে যদি কোনও বড় ধরনের আঘাত লাগে।

১০। দুর্ঘটনায় বড় ধরনের কোনও আঘাত লাগলে।

১১। বিষাক্ত ওষুধ সেবন করলে যেমন- মরফিয়া।

১২। বিভিন্ন রোগ ব্যধিজনিত কারণে- পোলিও ইত্যাদি।

১৩। বদ্ধ ঘরে বাতি জ্বেলে ঘুমোলে অনেক সময় শ্বাসরোধ হয়। কারণ দহনের ফলে বিষাক্ত কার্বন-ডাই-অক্সাইড গ্যাস জমা হয় এবং এতে করে শ্বাসরোধ হতে পারে।

১৪। মস্তিষ্কের শ্বাস প্রশ্বাস কেন্দ্র আঘাত প্রাপ্ত হলে।

শ্বাসরোধের প্রথম অবস্থার লক্ষণঃ

১। শ্বাস কষ্টকর এবং অনিয়মিত।

২। নাড়ী দ্রুত ও দুর্বল।

৩। রোগীর মূর্ছাভাব।

৪। রোগীর ঠোঁট, নাক, কান ইত্যাদি নীলাভ ভাব।

৫। রোগীর গলা ফুলে ওঠা।

৬। শ্বাস অনিয়মিত হবে- কখনও কম কখনও বেশি হবে।

৭। বিষাক্ত ওষুধের লক্ষণাদি ফুটে উঠবে।

প্রাথমিক চিকিৎসা কিভাবে করবেন?

১। যে সকল কারণে শ্বাসরোধ হচ্ছে তা দূর করতে হবে।

২। রোগীকে উদ্ধার করে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেবার ব্যবস্থা করতে হবে।

৩। শ্বাস প্রশ্বাস যাতে স্বাভাবিক থাকে সেজন্য অবশ্যই শ্বাসনালী পরিষ্কার ও খোলা রাখতে হবে।

৪ । শ্বাস বন্ধ হয়ে গেলে সাথে সাথে কৃত্রিম শ্বাস প্রশ্বাস চালু করতে হবে।

৫ । শক্ এড়াবার ব্যবস্থা করতে হবে।

৬। শ্বাস প্রশ্বাসে কোনও বাধা থাকলে সে বাধা দূর করতে হবে।

৭। মুক্ত বায়ুর ব্যবস্থা করার জন্য লোকের ভীড় কমাতে হবে।

৮। দ্রুত মেডিকেল ব্যবস্থা করতে হবে।

শ্বাসরোধের কারণগুলো কিভাবে দূর করবেন?

১। শ্বাসনালীতে কোনও পদার্থ আটকে গেলে রোগী নিশ্বাস নিতে পারে না কিংবা কথা বলতে পারে না। মুখ নীলবর্ণ ধারণ করে ও রোগী ঢলে পড়ে। তাই সময় নষ্ট না করে তাড়াতাড়ি প্রাথমিক চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে।

২। বন্ধ ঘরে বাতি দহনের ফলে যদি দম আটকে যায় তবে দরজা খুলে বা ভেঙ্গে ঢুকে রোগীকে বাইরে খোলা বাতাসে আনতে হবে।

৩। গলায় দড়ি দিলে দড়ি কেটে নিচে নামিয়ে এনে তার উপযুক্ত ব্যবস্থা করতে হবে। একজনের দ্বারা না হলে দুজনে মিলে করতে হবে।

শ্বাসরোধ হলে প্রাথমিক চিকিৎসা কিভাবে করবেন?

১। হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া যদি বন্ধ হয়ে যায় তবে এর প্রাথমিক অবস্থা দূর করতে হবে। টোকা মেরে, মৃদু ধাক্কা দিয়ে নাড়াচাড়া করে কিংবা চিৎকার করে রোগীর মধ্যে প্রাণের সঞ্চার ঘটাতে হবে।

২। সাহায্য করার জন্য চীৎকার দিয়ে লোক জড়ো করতে হবে।

শ্বাসনালীতে কিছু আটকে যদি দম বন্ধ হয়ে যায় তবে কি করবেন?

(ক) মুখ ফাঁক করে গলায় আঙ্গুল দিতে হবে এরপর জিনিসটি বের করার জন্য বমি করাতে হবে। কিংবা ডান হাতের তর্জনী দিয়ে জিনিসটি বের করে আনতে হবে। এজন্য প্র্যাকটিস করা প্রয়োজন।

(খ) ঘাড় ও মাথা সামনের দিকে ঝুঁকিয়ে দিতে হবে। ছোট ছেলেমেয়ে হলে পা ধরে ঝুলিয়ে দিতে হবে।

(গ) পিঠের দুটো পাখনা হাড়ের মাঝে জোরে টোকা দিতে হবে।

(ঘ) যদি রোগী অজ্ঞান থাকে তবে প্রথমে রোগীর পেটে চাপ দিতে হবে এরপর মুখ খুলে জিহ্বা ও নিচের চোয়াল একসঙ্গে ধরে জিহ্বাটি বাইরে বের করে আনতে হবে। মুখে কোনও পদার্থ থাকলে তাও বের করে ফেলতে হবে। শ্বাসনালীতে যেন বাতাস ঠিকমত চলাচল করে।

(ঙ) এ কাজ করার সময় টর্চ ব্যবহার করতে হবে, এরপর রোগীকে কাৎ করে শুইয়ে দিতে হবে। শিশুদের ক্ষেত্রে পেটে চাপ দেওয়া কখনও উচিত নয়।

কিভাবে বুকে বা পেটে চাপ প্রয়োগ করা হয়?

দাঁড়ানো অবস্থায়ঃ এই অবস্থায় প্রাথমিক চিকিৎসক রোগীর পেছনে দাঁড়াবে এরপর রোগীকে দাঁড় করিয়ে পেটে চাপ দিতে হবে। চাপ একবার বেশি দিলে আরেকবার কম দিতে হবে। এভাবে পেটে চাপ পড়লে রোগী বমি করে ফেলবে কিংবা তার স্বাভাবিক শ্বাসকার্য ফিরে আসবে।

শায়িত অবস্থায়ঃ এই প্রক্রিয়ায় রোগীকে চিৎ করে শোয়াতে হবে। এই অবস্থায় রোগীর পেট ব্যতিত দেহের অন্য কোনও স্থানে যেন চাপ না পড়ে, ধীরে ধীরে চাপ সৃষ্টি করতে হবে। এর মধ্যে একবার ঢিলা দিয়ে নিশ্বাস প্রশ্বাস স্বাভাবিক করার চেষ্টা করতে হবে।

বিষাক্ত ধোঁয়ায় যদি শ্বাসরোধ হয়ে যায় তখন কি করবেন?

১। প্রথমেই বন্ধ ঘরের দরজা জানালা সব খুলে দিতে হবে।

২। এরপর লোকজন ডেকে এনে রোগীকে ঘরের বাইরে নিয়ে আসতে হবে।

৩। কাছাকাছি হাসপাতাল থাকলে সেখানে অতি সত্বর রোগীকে স্থানান্তর করতে হবে।

৪। রোগীকে মুক্তবায়ু সেবনের ব্যবস্থা করতে হবে। প্রয়োজনে অক্সিজেন দিতে হবে।

৫। প্রাথমিক চিকিৎসক নিজেকে রক্ষা করে চলবেন।

৬। ভূ-গর্ভস্থ কোনও জলাধার কিংবা গর্ত, কুয়া ইত্যাদি থেকে রোগীকে উদ্ধার করতে হলে টর্চ জাতীয় জ্বলন্ত বাতি নিয়ে ঢুকতে হবে এবং Life line দিয়ে চলতে হবে।

৭। গ্যাস নিম্নগামী হলে দাঁড়িয়ে এগোতে হবে উর্ধগামী হলে গুড়ি মেরে এগোতে হবে।

৮। বিষাক্ত গ্যাসে নিশ্বাস নেওয়া যাবে না।

৯। বেশি রোগী থাকলে Life line সহ মুখোশ পরে এক একবার এক একজনকে উদ্ধার করতে হবে।

১০। রোগীকে কৃত্রিম শ্বাস প্রশ্বাসের ব্যবস্থা করতে হবে।

রোগী হঠাৎ অজ্ঞান হয়ে শ্বাসরোধ হলে কি করবেন?

১। প্রয়োজনে কৃত্রিম পদ্ধতিতে শ্বাস প্রশ্বাসের ব্যবস্থা করতে হবে।

২। অজ্ঞান রোগীকে প্রথমে চিৎ করে শোয়াতে হবে। এরপর মুখ কাৎ করে শোয়ালে মুখ ও শ্বাসনালী খোলা থাকবে। যদি শ্বাসনালীতে বাধাপ্রদানকারী কোনও বস্তু থাকে তবে তা বের হয়ে যাবে।

৩। রোগীর শ্বাস প্রশ্বাস স্বাভাবিক হয়ে আসলে রোগীকে রিকভারী পজিশনে রাখতে হবে।

৪ । মুখ খোলা রাখতে হবে এবং জিহ্বা যথাস্থানে ঠিক থাকতে হবে। জিহ্বা উল্টে যাতে পিছনের দিকে না যেতে পারে সেজন্য নিচের চোয়ালের কোণে বৃদ্ধাঙ্গুলি দিয়ে সামনের দিকে চাপ প্রয়োগ করে মুখ খোলার চেষ্টা করতে হবে।

৫। যদি বোঝা যায় যে, রোগী ঘাড়ে আঘাত প্রাপ্ত তবে ঘাড় ও মাথা পেছনের দিকে বাঁকা না করে নিচের চোয়াল ধরতে হবে এবং মুখ খোলা রেখে জিহ্বা হাত দিয়ে ধরে যথাস্থানে রেখে মুখের ভেতরের অংশ পরিষ্কার করতে হবে। মুখ ও শ্বাসনালী যাতে পরিষ্কার ও খোলা থাকে সেদিকে দৃষ্টি থাকতে হবে।

৬। এয়ার ওয়ে টিউবের সাহায্যে জিহ্বাকে যথা স্থানে রাখা যায় এবং শ্বাসনালীও খোলা থাকবে।

৭। মাথায় কোনও গুরুতর আঘাত প্রাপ্ত হলে তৎক্ষণাত হাসপাতালে পাঠাতে হবে।

কৃত্রিম উপায়ে শ্বাসক্রিয়া চালানোর পদ্ধতিঃ

বিভিন্ন কারণে রোগীর স্বাভাবিক শ্বাসক্রিয়া ব্যাহত হতে পারে কিংবা বন্ধ হতে পারে। এই সময়ে শ্বাস প্রশ্বাসের অনুকরণে রোগীর আবার স্বাভাবিক শ্বাস প্রশ্বাস ফিরিয়ে আনাকে বলা হয় কৃত্রিম শ্বাসক্রিয়া।

কৃত্রিম শ্বাস প্রশ্বাসের নানা উপায় চালু আছে। কৃত্রিম শ্বাস ক্রিয়া প্রাথমিক চিকিৎসক হাত দিয়ে করে থাকেন কিংবা চিকিৎসকও করতে পারেন। যন্ত্রের সাহায্যেও এটি করা যায়। কৃত্রিম শ্বাস প্রশ্বাসের মূল উদ্দেশ্য হলো রোগীর ফুসফুসকে প্রতি মিনিটে ১০ থেকে ১২ বার ছোট ও বড় করা। এতে করে ফুসফুসে একবার বাতাস প্রবেশ করে ও একবার বের হয়। এভাবেই কৃত্রিম শ্বাসক্রিয়া চালানো হয়।

কোন্ কোন্ পদ্ধতিতে কৃত্রিমভাবে শ্বাসক্রিয়া চালানো হয়?

মুখের মধ্যে মুখ দিয়ে শ্বাস ক্রিয়া চালানোঃ

এ পদ্ধতিতে প্রথমে রোগীকে চিৎ করে শোয়াতে হবে। এরপর রোগীর মুখ ফাঁক করে জোরে ফুঁ দিয়ে ও টেনে নিয়ে এ পদ্ধতি চালু করতে হবে। এ পদ্ধতিতে রোগীর মুখের ওপর পাতলা রুমাল বা কাপড় রেখে ফুঁ দিতে হবে। এ পদ্ধতিটি প্রতি মিনিটে ১২ থেকে ১৫ বার করতে হবে যতক্ষণ পর্যন্ত স্বাভাবিক শ্বাস ক্রিয়া চালু না হয়। তবে এটি সব সময় কার্যকরী পদ্ধতি নয়। এ ধরনের শ্বাসক্রিয়া চালিয়ে যেতে হলে একাধিক সাহায্যকারীর প্রয়োজন হয়।

মুখের মধ্যে মুখ দিয়ে শ্বাস ক্রিয়া চালানো

বুকের পেছন দিক দিয়ে কৃত্রিম পদ্ধতিতে শ্বাস ক্রিয়া চালানোঃ

এ পদ্ধতিকে সেফারের প্রণালী বলা হয়ে থাকে। এ পদ্ধতিতে রোগীকে উপুড় করে শোয়াতে হবে। রোগীর মুখ থাকবে নিচের দিকে এবং মাথাকে একপাশে কাত করে দিতে হবে যাতে রোগীর দাঁত মুখ মাটিতে ঠেকে না থাকে। এরপর বক্ষ পিঞ্জরের পেছনে এবং মেরুদন্ডের দু'পাশে হাত রাখতে হবে। রোগীর কোমরের দু'পাশে হাত দুটি এমনভাবে রাখতে হবে যেন শির দাঁড়ার দু'পাশে নিজের দুটি কব্জি ছুঁই ছুঁই করে। নিজের হাত দুটো এবং কনুই সোজা রাখতে হবে। বুড়ো আঙ্গুল দুটোকে সামনের দিকে রাখতে হবে। হাতের চেটো ও অন্যান্য আঙ্গুলগুলো কোমরে আড়াআড়িভাবে দু’দিকে ছড়িয়ে দিতে হবে। নিজের কনুই যাতে না বেঁকে থাকে সেদিকে দৃষ্টি দিতে হবে। সামনের দিকে ঝুঁকে তারপর চাপ দিতে হবে। চাপ দেওয়া ও ছাড়া ৫ সেকেণ্ডের মধ্যে শেষ করতে হবে। চাপ দেওয়াতে ৩ সেকেন্ড ও ছাড়াতে ২ সেকেণ্ড সময় নিতে হবে। যতক্ষণ স্বাভাবিক শ্বাস ক্রিয়া না আসবে ততক্ষণ পর্যন্ত এ পদ্ধতি চালিয়ে যেতে হবে। একজনের দ্বারা সম্ভব না হলে দ্বিতীয়জন এ পদ্ধতিতে কাজ করবে।

বুকের পেছন দিক দিয়ে কৃত্রিম পদ্ধতিতে শ্বাস ক্রিয়া চালানো

রোগীর পেট ও বুকের সংযোগ স্থলে চাপ দিয়ে কিভাবে শ্বাসক্রিয়া চালু করবেন?

রোগীকে চিৎ করে শুইয়ে দিতে হবে। এরপর মাথা, ঘাড়, মুখ একদিকে কাত করে রোগীর পেটের ও বুকের পাজরের সংযোগস্থল চিকিৎসকের দুই হাত রেখে বুকের দিকে চাপ দিতে হবে। প্রতি মিনিটে ১২ থেকে ১৫ বার পর্যন্ত করতেভহবে। স্বাভাবিক শ্বাসক্রিয়া চালু না হওয়া পর্যন্ত এ পদ্ধতি চালিয়ে যেতে হবে।

রোগীর পেট ও বুকের সংযোগ স্থলে চাপ দিয়ে কিভাবে শ্বাসক্রিয়া চালু

সিলভেস্টার প্রণালীতে শ্বাস ক্রিয়া চালানোঃ

এই প্রণালীতে রোগীকে চিৎ করে শুইয়ে দিয়ে রোগীর ঘাড়ের নিচে বালিশ দিতে হবে। রোগীকে শুইয়ে দু'হাত দিয়ে সজোরে তার কনুই দুটি টেনে তুলে বুকের দু'পাশে রাখতে হবে যাতে বুকের দু'পাশে চাপ পড়ে। রোগীর মাথাটা যেন বালিশের বাইরে ঝুলে পড়ে। রোগীর জিহ্বা উল্টে যেন বাতাস বন্ধ না হয় সেজন্য জিহ্বা সামনে রাখার চেষ্টা করতে হবে। রোগীর দেহের জামাকাপড় খুলে দিতে হবে।

এই পদ্ধতিতে রোগীর বুকে রোগীর হাত দ্বারা চাপ সৃষ্টি করে কৃত্রিম পদ্ধতিতে শ্বাস ক্রিয়া চালু করতে হবে। প্রথম কাজটি ৩ সেকেন্ড এবং দ্বিতীয় কাজটি ২ সেকেন্ড মোট ৫ সেকেন্ড রোগীর শ্বাস ক্রিয়া স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত এভাবে কৃত্রিম শ্বাস ক্রিয়া চালিয়ে যেতে হবে।

সিলভেস্টার প্রণালীতে শ্বাস ক্রিয়া চালানো

দাঁড়ানো অবস্থায় রোগীর বুকে চাপ দিয়ে শ্বাস ক্রিয়া চালানোঃ

প্রাথমিক চিকিৎসক রোগীর পেছনে দাঁড়িয়ে ঝুঁকে থাকা রোগীর বগলের তল দিয়ে দু'হাতে বুক ও পেটে চাপ সৃষ্টি করবে ও ছাড়বে। এ পদ্ধতি মিনিটে ১২ থেকে ১৫ বার করবে। এ পদ্ধতিতে শ্বাস ক্রিয়া ব্যতিত ফুসফুস ও খাদ্যনালীতে কিছু আটকে থাকলে তাও বের হয়ে যাবে।

বুকের মধ্যে চাপ দিয়ে শ্বাস ক্রিয়া চালানো এক হাতের ওপর আরেক হাতের তালু রেখে বুকের ওপর চাপ দিতে হবে। প্রতি মিনিটে ১২ থেকে ১৫ বার করতে হবে। যখন চাপ সৃষ্টি করা হবে তখন ফুসফুসের বাতাস বের হয়ে আসবে এবং চাপ যখন ছেড়ে দেওয়া হবে তখন বাতাস শ্বাসনালীর মাধ্যমে ফুসফুসে প্রবেশ করবে।

হোলজার নেলসন পদ্ধতিঃ

১। এই পদ্ধতিতে রোগীকে উপুড় করে শোয়াতে হবে।

২। রোগীর ঘাড় ও মাথা কাত করে রোগীর হাতের ওপরই রাখতে হবে।

৩। প্রাথমিক চিকিৎসক রোগীর মাথার কাছে হাঁটু গেড়ে বসবে।

৪। এরপর দু’হাত রোগীর পিঠে রেখে চাপ দিতে হবে।

৫ । রোগীর বাহু দুটি ওঠানামা করাতে হবে। পুনরায় দু'হাতে পিঠে চাপ দিতে হবে।

৬। এ প্রক্রিয়া মিনিটে ১২ বার করতে হবে। সাহায্যকারীকে রোগীর চোয়াল ধরে এবং মুখ তুলে রেখে খোলা ও পরিষ্কার রাখতে বলতে হবে।

৭। সোন্ডার জয়েন্ট বা কাছাকাছি কোনও অস্থিভঙ্গ থাকলে এই প্রক্রিয়া চলবে না।

হোলজার নেলসন পদ্ধতি
Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url