লেদ মেশিন কি? কত প্রকার ও কি কি? বিস্তারিত আলোচনা

লেদ মেশিন

লেদ মেশিন কি? কত প্রকার ও কি কি?

লেদ মেশিন এক প্রকার মেশিন টুলস যাহা বিদ্যুৎ শক্তি দ্বারা চালিত হয়। ইহা প্রধানত দুই প্রকার। যথা-

১। হরাইজন্টাল। 

২। ভার্টিক্যাল।

তাছাড়া নিম্ন লিখিত ভাবেও শ্রেণীবিন্যাস করা যায়। যথা-

১। স্পীড লেদ

২। মেটাল টার্নিং লেদ

৩। পুর্নাংঙ্গ ইঞ্জিন লেদ

৪। স্পেশাল লেদ

৫। অটোমেটিক লেদ।

লেদ মেশিনের স্পেসিফিকেশন (Specification) বা বিনির্দেশ বলতে কী বুঝায় ?

লেদ মেশিন আকারে, প্রকারে ও ব্যবহারে বহু ধরনের হয়ে থাকে। এমন অনেক লেদ মেশিন আছে যা দ্বারা একটি বিশেষ কাজ ছাড়া অন্য কোন কাজ করা যায় না। আবার এমন লেদও আছে যা অনেক ধরনের কাজ করার উপযােগী। তাই লেদ মেশিনই হােক অথবা অন্য কোন মেশিন টুলস হােক এর সঠিক পরিচিতির প্রয়ােজন। মেশিন টুলস এর সার্বিক পরিচিতি প্রকাশের জন্য উল্লেখযােগ্য বিষয়সমূহকে এ মেশিনের বিনির্দেশক বা স্পেসিফিকেশন (Specification) বলা হয় ।

লেদ স্পেসিফিকেশন প্রকাশ করতে কী কী বিষয় উল্লেখ করা প্রয়ােজন ?

লেদ স্পেসিফিকেশন প্রকাশ করতে নিম্নলিখিত বিষয় উল্লেখ করা প্রয়ােজন-

১. কেন্দ্রের উচ্চতা (Height of center)

২. কেন্দ্র থেকে বেডের উপর সর্বাধিক আবর্তনযােগ্য ব্যাস (Swing over bed)

৩. স্পিন্ডল বেগের বিস্তৃতি (Spindle speed range)

৪. মেট্রিক প্যাচের পিচসমূহ (Metric thread pitch)

৫. ক্রস স্লাইডের ভ্রমণ (Cross slide travel)

৬. টেইল স্টকের স্লিভ ভ্রমণ (Tall stock sleeve travel)

৭. মােটরের অশ্ব-শক্তি এবং আরপিএম (Motor Horse Power and RPM)

লেদের প্রধান প্রধান অপারেশন সমূহঃ 

লেদের প্রধান প্রধান অপরেশন সমূহ নিম্নে দেওয়া হল:

(১) টার্নিং

(২) ফেসিং।

(৩) ড্রিলিং

(৪) রিমিং।

(৫) প্লেনিং।

(৬) থ্রেড কাটিং

(৭) বােরিং।

(৮) সেপিং

(৯) টেপার টার্নিং

(১০) নার্লিং

(১১) স্পট ফেসিং 

(১২) পলিসিং

(১৩) কাউন্টার বােরিং

(১৪) কাউন্টার শিংকিং।

ফেসিং, বােরিং, রিমিং ও নার্লিং নিয়ে আলোচনাঃ

ফেসিংঃ সিলিন্দ্রিক্যাল জবের সম্মুখ এন্ড কাটিং টুলের সাহায্যে মসৃন করাকে ফেসিং বলে ।

বােরিংঃ যে পদ্ধতিতে মেশিনের সাহায্যে বােরিং টুল দ্বারা ড্রিল করা ছিদ্র (Hole) এর মাপকে বড় করা হয়, তাকে বােরিং বলে।

রিমিংঃ ইহা একটি ফিনিশিং প্রসেস, এক্ষেত্রে রিমার নামক টুলের সাহায্যে পূর্ব প্রস্তুতকৃত হােল মেশিনিং করা হয় ।

নার্লিংঃ নার্লিং টুলের সাহায্যে কোন জবের উপর খাজ তৈরি করাকে নার্লিং বলে। এটা এক প্রকার অমসৃণ আকৃতি যার ফলে জবকে সুবিধাজনকভাবে ধরা যায় ।

লেদ মেশিনের প্রধান ৭টি অংশের নামঃ

লেদের প্রধান ৭টি অংশ হলাে-

১ । বেড

২। হেড ষ্টক

৩। টেইল স্টক

৪। ক্যারেজ

৫। চাক

৬। ক্রস স্লাইড এন্ড কম্পাউন্ড

৭। কুইক চেঞ্জ গিয়ার বক্স।

লেদ মেশিনের বিভিন্ন অংশের নাম ও তার বর্ণনাঃ

লেদ মেশিন

হেড স্টক (Headstock): লেদ মেশিনের লাইভ সেন্টার বা স্পিন্ডল ড্রাইভ মেকানিজমকে কন্ট্রোল করাই হেড স্টকের কাজ।

ক্রস স্লাইড (Cross Slide): এটি স্যাডেলের উপর ডভটেইল স্লটে কাজ করে, বাটালি আড়াআড়ি চালনায় এটা ব্যবহার করা হয়। ক্রস স্লাইড স্কুকে ঘুরানাে হলে ব্লকটি সামনে পিছনে চলাচল করে ফলে ক্রস স্লাইড ও সামনে-পিছনে চলাচল করে।

স্পিন্ডল (Spindle): স্পিন্ডল দ্বারা লেদ মেশিনের চাক, ফেইস প্লেট বা ড্রাইভকে ধরে রাখা হয়।

স্যাডল (Saddle): এটা ঢালাই লােহার তৈরি এবং ইংরেজী এইচ (H) অক্ষরের মতাে। স্যাডল ক্রস স্লাইড, কম্পাউন্ড রেস্ট, টুল পােস্টকে যাতায়াতে সাহায্য করে। স্যাডল বেডের বাইরের পথের উপর লাগানাে থাকে। এটা ডভটেইল পথে আড়াআড়ি বা ক্রসভাবে চলাচল করতে পারে ।

লীড স্কু (Lead Screw): একটি নাট (Nut) এক পাক ঘুরালেই স্ক্রুর উপর অক্ষের সমান্তরাল ভাবে যতটা দুরত্ব এগিয়ে যায় তাকে বলে লিড (Lead) এবং স্বয়ংক্রিয় Turning এবং প্যাঁচ কাটার কাজে লিড স্ক্রু ব্যবহৃত হয়। থ্রেড করার সময় এক শ্রেণীর গিয়ার দ্বারা হেড ষ্টক স্পীন্ডলের সহিত লীড স্ক্রু যুক্ত করা হয়।

টুল পােষ্ট (Tool Post): এটি ক্যারেজের সব চাইতে উপরের।যন্ত্রাংশ। এই যন্ত্রাংশ টুল হােল্ডারকে (Tool Holder) যথাস্থানে ধরে রাখে।

ক্যারেজ (Carrage): ক্যারেজ এর প্রধান কাজ হল, লেদে কোন কাৰ্যবস্তুর ধাতু অপসারনে টুলকে সহায়তা প্রদান করা এবং Feed দেওয়া।এটি লেদ বেডের উপর আড়াআড়িভাবে বসান থাকে।

কম্পাউন্ড রেস্ট (Compound Rest): অল্প দৈর্ঘ্যের টেপার, চ্যাম্ফার এবং অন্যান্য কাজে বাটালিকে কোণাকুণিভাবে যাতায়াতের জন্য কম্পাউন্ড রেস্ট ব্যবহার করা হয়। এটাকে যে কোন কোণে ঘুরানাে যায় ।

ফিড রড (Feed Rod) : ফিড রড অ্যাপ্রােন এর মধ্য দিয়ে যায় এবং ইহাতে হেড ষ্টক থেকে ফীড বক্সের মাধ্যমে পাওয়ার আসে। ফিড রডের সাহায্যে ক্যারেজকে বেডের উপর এবং টুল পােষ্টকে ক্রস স্লাইডের উপর সংয়ক্রিয়ভাবে চালনা করা হয়।

লেদ এ্যাটাচমেন্ট কি?

লেদ এ্যাটাচমেন্ট বলতে লেদ মেশিনের জন্য বিশেষভাবে নির্মিত। কিছু অতি প্রয়ােজনীয় ডিভাইসকে বুঝায়। এটা লেদ মেশিনের সাথে সংযুক্ত করলে মেশিনের বহুমুখী কার্য সম্পাদন যােগ্যতা, কার্য দক্ষতা ও কার্য সম্পাদনের সুযােগ-সুবিধা বৃদ্ধি পায়। এ্যাটাচমেন্ট ব্যবহার করার ফলে লেদ মেশিনির অপারেশন ছাড়াও কিছু সাধারণ কাজ সম্পন্ন করা যায়।

লেদ মেশিনে ব্যবহৃত এ্যাটাচমেন্টের নামঃ

লেদ মেশিনে ব্যবহৃত এ্যাটাচমেন্টের নামসমূহ নিম্নরূপঃ

১. টেপার এ্যাটাচমেন্ট।

২. রিলিভিং এ্যাটাচমেন্ট ।

৩. মিলিং এ্যাটাচমেন্ট

৪. ষ্টেডি রেষ্ট ।

৫. ফলােয়ার রেষ্ট ।

৬. গ্রাইন্ডিং এ্যাটাচমেন্ট ।

৭. ক্যারিজ ষ্টপ।

৮. বল টার্নিং রেষ্ট ।

৯. র‍্যাপিড ট্রাভার্স এ্যাটাচমেন্ট।

১০. গিয়ার কাটিং এ্যাটাচমেন্ট ।

১১. টারেট এ্যাটাচমেন্ট।

থ্রেড বা প্যাচ বলতে কী বুঝায়?

কোন একটি বেলনাকৃতি (Cylinder) বা মােচাকৃতি কিংবা শঙ্কু আকৃতির (Cone) বস্তুর উপর দিকে অথবা ভিতরের দিকে একই রকম ম্যাপ ও আকৃতি বিশিষ্ট এক বা একাধিক শিরা (Ridge) যদি এমনভাবে জড়ান হয় যে, উহা দৈর্ঘ্য বরাবর একই হারে এগিয়ে যায়, তাহলে তাকে স্ক্রু (Screw) বলে এবং জড়ান শিরাকে প্যাঁচ বা থ্রেড (Thread) বলে।

পিচ কী?

অক্ষের সমান্তরালে যে কোন একটি প্যাচের উপরের একটি বিন্দু হতে পরবর্তী প্যাচের উপরের অনুরূপ বিন্দুর দূরত্বকে পিচ বলে। অর্থাৎ

পিচ = ( ১/ প্রতি ইঞ্চিতে প্যাচের সংখ্যা)

চারটি থ্রেড কাটিং টুলের নামঃ

চারটি থ্রেড কাটিং টুলের নাম-

১। ভী-থ্রেড কাটিং টুল

২। স্কয়ার থ্রেড কাটিং টুল

৩। একমি থ্রেড কাটিং টুল 

৪। বাটরেস থ্রেড কাটিং টুল ।

মাল্টি স্টার্ট বা বহুপন্থা বিশিষ্ট থ্রেড কাটা পদ্ধতিগুলােঃ

মাল্টি স্টার্ট থ্রেড কাটা পদ্ধতি-

১। স্টাড গিয়ার পদ্ধতি

২। ফেইস প্লেট পদ্ধতি

৩। কম্পাউন্ড স্লাইড পদ্ধতি

৪। থ্রেড চেসিং ডায়াল পদ্ধতি

চাক (Chucks) কি?

চাক (Chucks) : চাক হল এমন এক ধরনের ডিভাইস যা দিয়ে দ্রুত কার্যবস্তুকে আটকিয়ে টার্নিং, ড্রিলিং, রিমিং, বােরিং এবং ইন্টারনাল থ্রেডিং প্রভৃতি মেশিনিং অপারেশন সম্পন্ন করা যায়। এক্ষেত্রে টেইলস্টকে সেন্টার এর সাহায্যে কাৰ্যবস্তুর মুক্ত প্রান্তে সাপাের্ট দেওয়া প্রয়ােজন হয়।

লেদ চাক কত প্রকার ও কি কি সংক্ষিপ্ত বর্ননাঃ

সচরাচর ব্যবহৃত চাককে ৬ ভাগে ভাগ করা যায়।

(১) থ্রি-জ ইউনিভার্সাল চাক (3-Jaw Universal Chuck)

(২) ফোর-জ ইউনিভার্সাল চাক (4-Jaw Universal Chuck)

(৩) জ্যাকব চাক (Jacobs Chuck)

(৪) ড্র-ইন-কলেট চাক (Draw-in-Collet Chuck)

(৫) ম্যাগনেটিক চাক (Magnetic Chuck)

(৬) কম্বিনেশন চাক (Combination Chuck)

(১) থ্রি ‘জ' চাকঃ থ্রি 'জ’ চাক গােলাকার কিংবা ষড়ভূজাকৃতির জব অথবা সিলিড্রিক্যাল, সূষম আকৃতির জবকে ধরার জন্য ব্যবহার করা হয় । একে স্বয়ংক্রিয় কেন্দ্রাভিমূখী থ্রি-জ্য বিশিষ্ট চাকও বলা হয়। যখন চাক কী ঘুরানাে হয়, তখন এ চাকের তিনটি ‘জ’-ই কেন্দ্রাভিমূখে একত্রে চলাচল করে।

থ্রি ‘জ চাক
থ্রি ‘জ চাক

(২) ফোর ‘জ’ চাকঃ জবের সারফেস যখন অসমান হয় তখন ফোর ‘জ’ চাক ব্যবহৃত হয়। জ’ গুলাে চাবির সাহায্যে আলাদাভাবে এডজাষ্ট করে। কাজে লাগানাে হয়। ইরেগুলার জব ধরার জন্য এ চাক ব্যবহার করা হয়।

ফোর ‘জ’ চাক
ফোর ‘জ’ চাক

(৩) জ্যাকব চাক (Jacobs Chuck): যখন ছােট ব্যাসের কার্যবস্তু যেমন- স্কু, পিন ইত্যাদিকে মেশিনিং কার্য পরিচালনা করা হয় তখন জ্যাকব চাক ব্যবহৃত হয়। এ চাক ক্ষুদ্র আকৃতির কার্যের ক্ষেত্রে স্বয়ংক্রিয় বা স্বতন্ত্র চাকের তুলনায় অধিক উপযােগী।

(৪) কলেট চাক ( Collet Chuck): এটা কলেট এ্যাটাচমেন্ট নামে পরিচিত। এটি ট্যাপার স্লীপ যা লেদ স্পিন্ডল বােরে লাগানাে থাকে। একটি ড্র-বার ও একটি কলেট সেটের সমন্বয়ে এটা গঠিত। এ চাক ছােট ব্যাসের জব ধরার কাজে ব্যবহৃত হয়। সাধারণত ক্যাপাসটন লেদে এই ধরনের চাক ব্যবহার করা হয়। 

কলেট চাক
কলেট চাক

(৫) ম্যাগনেটিক চাক (Magnetic Chuck): ম্যাগনেটিক চাক স্থায়ী ম্যাগনেট বিশিষ্ট স্টিল দিয়ে তৈরী। এ ধরনের চাক সচরাচর ক্ষুদ্র, পাতলা জবের ক্ষেত্রে সামান্য কাট দিতে এবং যেখানে পৃষ্ঠ দেশের মসৃণতা খুবই জরুরী এমন স্থলে ব্যবহার করা হয়। এটি দ্রুত ক্রিয়াশীল একটি চাক। এ চাক ব্যবহারে কাৰ্যবস্তুর তল নষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা থাকে না।

ম্যাগনেটিক চাক
ম্যাগনেটিক চাক

(৬) কম্বিনেশন চাক (Combination Chuck): কম্বিনেশন চাক একটি চার বা ছয় জ্য বিশিষ্ট চাক হতে পারে যার ‘জ্য গুলাে চার ‘জ্য’ বিশিষ্ট ইন্ডিপেন্ডেন্ট চাকে স্বতন্ত্রভাবে অথবা তিন ‘জ্য বিশিষ্ট ইউনিভার্সাল চাকের ন্যায় একত্রে সমম্বয় বা অ্যাডজাস্ট করা যায়। সাধারণত পুনঃপুনঃ একই ধরনের ওয়ার্কপিস ধরতে কম্বিনেশন চাক সুবিধাজনক।

কম্বিনেশন চাক
কম্বিনেশন চাক

থ্রি-‘জ'চাক ব্যবহারের সুবিধাঃ

সাধারণত গােলাকার এবং ষড়ভুজাকৃতি প্রস্থচ্ছেদ বিশিষ্ট কার্যবস্তু অতি সহজে চাকে আবদ্ধ করতে থ্রি-‘জ’ চাক ব্যবহৃত হয় । থ্রি-‘জ’ চাকে প্রত্যেকটি ‘জ’ স্বয়ংক্রিয়ভাবে চলাচল করে ফলে একটি ‘জ’ কে ঘুরিয়ে অতি সহজে ও কম সময় কাৰ্যবস্তুকে সেন্টারিং করা যায়।

থ্রি-জ’ এবং ফোর-‘জ’ চাকের মাঝে পার্থক্যঃ

থ্রি-‘জ’ এবং ফোর-‘জ’ চাকের মাঝে পার্থক্য নিম্নরূপ:

থ্রি-‘জ চাকঃ

১। এতে তিনটি ‘জ' থাকে ।

২। এটিকে স্বয়ংক্রিয় কেন্দ্রভিমুখী চাক বলে।

৩। তিনটি ‘জ একত্রে চলাচল করে।

৪। গােলাকার ও ষড়ভুজাকৃতির কার্যবস্তু ধরতে ধরতে ব্যবহৃত হয়।

ফোর-‘জ’ চাকঃ

১। এতে চারটি ‘জ' থাকে।

২। প্রত্যেক ‘জ স্বতন্ত্রমুখী জ’ বলে।

 ৩।  প্রত্যেকটি 'জ' আলাদাভাবে চলাচল করে।

৪। জটিল আকৃতির কার্যবস্তু ধরতে ব্যবহৃত হয়।

ভ্যাকুয়াম চাক এর মূলনীতিঃ

ঝাঝরা বা ছিদ্রবিহীন কার্যবস্তুকে চাকের প্রশস্ত তলের উপর রেখে বাযু শােষক পাম্প এর সাহায্যে চাকের ভিতরের এবং সংস্পর্শিত তলের মধ্যকার বাতাস বের করে বায়ুমন্ডলীয় চাপের নিচে আনা হয়। যার ফলশ্রুতিতে বাইরের বাতাসের চাপে কাৰ্যবস্তু চাকের সাথে দৃঢ়ভাবে লেগে থাকে।

ভ্যাকুয়াম চাক কখন ব্যবহার করা হয়?

অলৌহজাত এবং অচুম্বক ধাতুর বিশেষ আকারের ও পরিমাপের কাৰ্যবস্তুকে মেকানিক্যাল ক্লাম্পিং ব্যতীত এবং কার্যবস্তুর কোনরুপ ক্ষতিসাধন না করে ধরার ক্ষেত্রে বা বাধার ক্ষেত্রে ভ্যাকুয়াম চাক ব্যবহার করা হয়।

টেপার কী?

যদি কোন ওয়ার্কপিসের প্রস্থ বা ব্যাস-এর মাপ সমহারে বাড়ে বা কমে, তাকে টেপার বলে ।

লেদ মেশিনে কী কী উপায়ে টেপার কাটা যায়?

লেদে নিম্নলিখিত উপায়ে টেপার কাটা যায়। যথাঃ-

১. কম্পাউন্ড স্লাইড পদ্ধতি

২. ফর্ম টুল পদ্ধতি (Form Tool Method)

৩. টেল স্টক সরিয়ে (Tail stock method)

৪. টেপার অ্যাটাচমেন্ট পদ্ধতি (Taper Attachment)

৫. রিমার দ্বারা (By Reamer)

লেদ সেন্টারে জব ধরার জন্য যেসব ইকুইপমেন্ট ব্যবহার কর হয়ঃ

লেদ সেন্টারে জব ধরার জন্য যে সমস্ত ইকুইপমেন্ট ব্যবহার করা হয় সেগুলো হলোঃ

১। ডেড সেন্টার

২। ড্রাইভ প্লেট

৩। থ্রি-জ’ চাক

৪। ফোর-জি’ চাক

৫। ফেস প্লেট

৬। ম্যাগনেটিক চাক

৭। কলেট চাক

৮। ম্যান্ড্রেল।

৯। লাইভ সেন্টার

১০। ড্রাইভিং ডগ

১১। ফলােয়ার রেস্ট

১২। স্টেডি রেস্ট

১৩ | আরবার।

লাইভ এবং ডেড সেন্টার এর মধ্যে পার্থক্যঃ

লাইভ সেন্টারঃ লাইভ সেন্টার হেড ষ্টকের স্পিন্ডলে থাকে এবং জবের সাথে ঘূর্নায়মান থাকে। ইহা লেদ

মেশিনে জব ধরার কাজে ব্যবহার করা হয়।

ডেড সেন্টারঃ ডেড সেন্টার টেইল উকের সাথে থাকে এবং ইহা ঘূর্নায়মান নয়। ইহা লেদ মেশিনে জব ধরার কাজে ব্যবহার করা হয়।

ফেস প্লেট কি?

ফেস প্লেটঃ ফেস প্লেট হচ্ছে এক প্রকার গােলাকার মেটাল প্লেট যাহা হেডষ্টকের সাথে লাগানাে হয়। যে সব জব সুবিধা জনক ভাবে লেদ চাকে আটকানাে যায় না সেসব জবকে ফেস প্লেট দ্বারা আটকানাে হয়।

ষ্টেডি রেষ্ট কি?

ষ্টেডি রেষ্টঃ কম ব্যাসের লম্বা শ্যাফটকে লেদ মেশিনে টার্নিং করার সময় ইহাকে সাপাের্ট করার জন্য যে যন্ত্র ব্যবহার করা হয় তাকে ষ্টেডি রেষ্ট বলে। লম্বা স্পিন্ডলকে বােরিং এবং থ্রেডিং করার সময় ও ইহা ব্যবহার করা হয়। কাটিং টুলের চাপে যাতে ওয়ার্ক পিচ ভেঙ্গে না যায় সেজন্য ইহা ব্যবহার করা হয় । ইহা কাটিং টুলের সাথে সাথে যাতায়াত করে না।

ফলােয়ার রেষ্ট কি?

ফলােয়ার রেষ্টঃ ষ্টেডি রেষ্ট যে কারনে ব্যবহার করা হয় ইহাও সে কারণে ব্যবহার করা হয়। তবে ইহা লেদ স্যাডল এর সাথে লাগানো থাকে এবং ইহার সাথে সাথে যাতায়াত করে ।

আরবার (Arbor) কি?

আরবার (Arbor): পূর্বে মেশিনিংকৃত, যথাযত ছিদ্র যুক্ত ক্ষুদ্র সম্ভার খন্ড ধরার জন্য প্রসার্য (Expandable) অথবা প্যাচ বিশিষ্ট ডিভাইসকে আরবার বলে ।

লেদ মেশিনের সুয়িং কাকে বলে?

লেদ মেশিনের হেড স্টক সেন্টার থেকে বেডের উপর সর্বাধিক আবর্তনযােগ্য ব্যাসকে সুয়িং বলে। অর্থাৎ সর্বাধিক ব্যাসের কার্যবস্তু যা লেদ বেড পথের উপর আবর্তন করতে পারে তাকে সুয়িং (Swing) বলে।

কাটার গভীরতা কি কি বিষয়ের উপর নির্ভর করে?

কাটার গভীরতা নিম্নোক্ত বিষয়ের উপর নির্ভর করে । যথা-

(১) কাটিং স্পীড 

(২) মেশিনের দৃঢ়তা

(৩) কাটিং টুলের পদার্থের গুণাগুণ ইত্যাদি।

লেদ মেশিনে যে সব একসেসরিজ ব্যবহার করা হয় সেগুলোর নামঃ

লেদ মেশিনে যেসব একসেসরিজ ব্যবহার করা হয় সেগুলো হলােঃ

১। ড্রাইভিং প্লেট

২। ডেড সেন্টার

৩। লাইভ সেন্টার

৪। ফেস প্লেট

৫। স্টেডি রেষ্ট

৬। ফলােয়ার রেষ্ট

৭। কলেট চাক

৮। ড্রিল হােল্ডার 

৯ । টেপার টার্নিং এ্যাটাচমেন্ট

১০। কোল্যান্ট ইকুইপমেন্ট।

লেদ মেশিনের সাইজ কিভাবে নির্ণয় করা যায়?

লেদ মেশিনের সাইজ নিম্নের যে কোন ভাবে নির্ণয় করা যায়। যথাঃ

(ক) লেদ বেড থেকে হেড ষ্টকের সেন্টার পর্যন্ত উচ্চতা দ্বারা লেদের সাইজ নির্ধারন করা হয়।

(খ) জবের সর্বোচ্চ ব্যাসের দ্বারা যাহা লেদ বেডের উপর ঘুরতে পারে।

(গ) হেডষ্টক সেন্টার থেকে টেইল ষ্টক সেন্টার পর্যন্ত জবের সর্বোচ্চ দৈর্ঘ্য দ্বারা লেদ সাইজ নির্ধারন করা হয়। ইহা মিলিমিটারে পরিমাপ করা হয়।

(ঘ) হেড ষ্টক সহ লেদ বেডের দৈর্ঘ্য দ্বারা সাইজ নির্ধারন করা হয়। ইহা মিটারে পরিমাপ করা হয়।

(ঙ) স্পিন্ডল গর্তের ব্যাস দ্বারা লেদের সাইজ নির্ধারন করা হয়।

কার্টিং স্পীড, ফীড এবং ডেপথ অফ কাট কি?

ঘূর্ণায়মান জবের পরিধি বরাবর কার্টিং টুল প্রতি মিনিটে যত দূরত্ব অতিক্রম করে তাকে কাটিং স্পীড বলে ।

অর্থাৎ কাটিং স্পীড, Cs=(πDN /1000) m/min

এখানে D=মিলিমিটার

ফীডঃজবের প্রতি ঘূর্ননে উহার সারফেসের সমান্তরালে কাটিং টুল যে দূরত্ব অতিক্রম করে তাকে ফীড বলে।

ডেপথ অফ কাটঃ জবের সারফেসের সাথে লম্বালম্বিভাবে কাটিং টুল যে গভীরতায় থাকে তাকে ডেপথ অফ কাট বলা হয়।

মেশিনের কাটিং স্পীড যেসব বিষয়ের উপর নির্ভর করেঃ

মেশিনের কাটিং স্পীড নিম্নলিখিত বিষয়ের উপর নির্ভর করে ।

যেমন-

(১) কাটিং টুল জিওমেট্রি।

(২) টুল ম্যাটেরিয়াল

(৩) কাটিং ম্যাটেরিয়াল।

(৪) ঘর্ষণাংক

(৫) কাটিং ফ্লুইড ।

ফীড এর হার কী কী বিষয়ের উপর নির্ভর করে?

ফীডের হার নির্ভর করে-

১. মেশিনের শক্তি ও দৃঢ়তা

২. মসৃণ ও অমসৃণ কাটিং মাত্রা

৩. কাৰ্যবস্তুর ভৌতিক (Physical) চরিত্র

৪. কর্তন গভীরতা

৫. বাটালির কর্মক্ষমতা ইত্যাদি।

স্পিন্ডল স্পীড ও কাটিং স্পীডের মধ্যে পার্থক্যঃ

স্পিন্ডল স্পীডঃ

(১) প্রতি মিনিটে মেশিনের স্পিন্ডলের ঘূর্ণন সংখ্যাকে স্পিন্ডল স্পীড বলে ।

(২) স্পিন্ডল স্পীড হল মেশিন স্পীড ।

(৩) স্পিন্ডল স্পীড প্রতি মিনিটে ঘূর্ণন সংখ্যা দ্বারা প্রকাশ করা হয়।

(৪) স্পিন্ডল স্পীড এর একক RPM

(৫) স্পিন্ডল স্পীড মেশিনের শক্তি ও  প্রকৃতির উপর নির্ভর করে।

৬) স্পিন্ডল স্পীড, (12xকাটিং স্পীড/π x কার্যবস্তুর পরিধি)

কাটিং স্পীডঃ

(১) মেশিনের কাটিং অপারেশনের জন্য কাটিং টুলের কাটিং পয়েন্ট যে গতিতে বা স্পীডে ওয়ার্কপিস ম্যাটেরিয়ালকে অতিক্রম করে তাকে কাটিং স্পীড বল ।

(২) কাটিং স্পীড ও মেশিন স্পীড আলাদা।

(৩) কাটিং স্পীড প্রতি মিনিটে অতিক্রান্ত দূরত্ব দ্বারা প্রকাশ করা হয়।

(৪) কাটিং স্পীড এর একক FPM (Feet Per Minute)

অথবা MPM(Meter Per Minute)।

(৫) কাটিং স্পীড কার্যবস্তুর উপাদান  তার আকার এবং দৃঢ়তার উপর নির্ভর করে ।

(৬) কাটিং স্পীড,Cs=( কার্যবস্তুর পরিধি x ঘূর্ণন হার / ১২)

কাটিং স্পীড ও ফিডের মাঝে পার্থক্যঃ

কাটিং স্পীডঃ

১। মেশিনে কাটিং অপারেশনের

জন্য কাটিং টুলের কাটিং পয়েন্ট যে গতিতে বা স্পীডে ওয়ার্কপিস মেটেরিয়ালকে অতিক্রম করে, তাকে কাটিং স্পীড বলে ।

২। কাটিং স্পীডের একক হল- মিটার/মিনিট এবং ফুট/মিনিট ।

৩। কাটিং স্পীড=(জবের পরিধি (mm) X ঘূর্ণন হার / 1000)

                        = ( πDN / 1000) m/min

ফিডঃ

১। কোন জবের প্রতি ঘূর্ণনে উপরিতলের সমান্তরালে কাটিং টুল যে পরিমাণ অগ্রসর হয়, তাকে ফিড (feed) বলে ।

২। ফিডের একক হল- mm/rev এবং inch/rev

ফিড = ( কাটের দৈর্ঘ্য বা জবের দৈর্ঘ্য / মেশিনিং সময় X rpm) 

        =( L / T x N) mm/rev

ক্যাপস্টান বা টারেট লেদ বলতে কি বুঝায়?

ক্যাপস্টান বা টারেট লেদ হল সেন্টার লেদেরই উন্নত সংস্করণ মাত্র। দ্রুত উৎপাদনের উদ্দেশ্যে ইঞ্জিন লেদের সামান্য পরিবর্তন তথা টেইল স্টকের পরিবর্তে টারেট বিশিষ্ট যে লেদ প্রস্তুত করা হয় তাকে ক্যাপস্টান বা টারেট লেদ বলে ।

টারেট বা ক্যাপস্টান লেদের শ্রেণীবিভাগঃ

টারেট লেদকে এদের পরিকল্পিত আকার ও ব্যবহার অনুসারে নিম্নলিখিত ভাগে বিভক্ত করা যায়। যথা-

(১) আনুভুমিক বা হরাইজন্টাল লেদ (Horizontal Lathe)।

(ক) র‍্যাম টাইপ

(খ) স্যাডেল টাইপ

(২) উলম্ব বা ভার্টিক্যাল লেদ (Vertical Lathe)

(ক) সিঙ্গেল স্টেশন।

(খ) মাল্টি স্টেশন

(৩) অটোমেটিক (Automatic)

টারেট বা ক্যাপস্টান লেদের মূল অংশ কয়টি?

টারেট লেদের মূল অংশ ছয়টি। যথা-

(১) হেড স্টক

(২) ক্যারেজ সন্নিবেশ

(৩) মােটর

(৪) হেক্সাগােন টারেট

(৫) ক্যাপস্টান হুইল 

 (৬) র‍্যাম/স্লাইড।

ইঞ্জিন লেদের তুলনায় টারেট লেদের সুবিধাসমূহঃ

(১) সঠিক পর্যায়ক্রমে ব্যবহারের জন্য কাটিং টুলগুলােকে পূর্বেই সেট করে রাখা হয়।

(২) প্রত্যেক স্টেশনে কাটিং টুলের জন্য ফিড স্টপ থাকে, যাতে প্রত্যেক কাটের দৈর্ঘ্য পূর্বের কাটের দৈর্ঘ্যে সমান হয়।

(৩) একই স্টেশন থেকে মাল্টিপল কাট দেয়া সম্ভব হয়। যেমন- টার্নিং ও বােরিং এর জন্য কাট।

(৪) কম্বাইন্ড কাট ব্যবহার করা সম্ভব হয়। যেমন- ক্রস সাইডের উপর অবস্থিত টারেটে বাঁধা টুল একই সময়ে কাট দিতে পারে।

(৫) মাল্টিপল ও কম্বাইন্ড কাটের টারেট লেদের গঠন যথেষ্ট শক্ত ও শক্তিশালী হয়।

(৬) টারেট লেদ ও বিভিন্ন প্রকার এ্যাটাচমেন্ট যেমন- টেপার টার্নিং এ্যাটাচমেন্ট, থ্রেড চেসিং এ্যাটাচমেন্ট এবং ডুপ্লিকেটিং এ্যাটাচমেন্ট ব্যবহৃত হতে পারে এবং সেগুলাে টেপ নিয়ন্ত্রিত হতে পারে।

(৭) টারেট লেদ কোন নির্ধারিত জবের জন্য একবার সেট করা হলে কোন সমন্বয় করার পূর্ব পর্যন্ত একই পরিমাপ বিশিষ্ট অনেক জব তৈরী করতে সক্ষম হয়।

(৮) ইন্টারচেঞ্জেবল বা বিনিময়ে উৎপাদনের জন্য টারেট লেদের উন্নয়ন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।

(৯) বার ও চার্কিং ওয়ার্ক, থ্রেড কাটিং, টেপার টার্নিং, ড্রিলিং, বােরিং রিমিং, ট্যাপিং, গ্রভিং, পার্টিং, অফ ইত্যাদি অপারেশনসমূহ টারেট লেদে সম্পন্ন হয়ে থাকে।

আরও পড়ুনঃ সিএনসি মেশিন কি? সিএনসি মেশিন সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা

মেটাল কাটিং কত প্রকার ও কি কি?

মেটাল কাটিং দুই প্রকার। যেমনঃ

(১) অর্থোগােনাল কাটিং

(২) অবলিক কাটিং

অর্থোগােনাল কাটিং এবং অবলিক কাটিং এর মধ্যে পার্থক্যঃ

নিম্নে এদের মধ্যে পার্থক্য দেওয়া হলোঃ

অর্থোগােনাল কাটিংঃ

১। টুলের কাটিং এজ টুল ফিডের দিকের সাথে লম্ব ভাবে থাকে।

২। চিপস প্রবাহের গতির দিক টুলের কাটিং এজ এর লম্ব বরাবর হয়।

৩। কাটিং বলের দুইটি উপাদান টুলের উপর কাজ করে এবং উহারা একই তলে থাকে।

৪। ওয়ার্কপিসের প্রত্যেক পাশের চওড়া কাটিং এজ পরিষ্কার করে দেয়।

৫। টুল লাইফ বেশি।

অবলিক কাটিংঃ

১। টুলের কাটিং এজ টুল ফিডের দিকের সাথে হেলানাে ভাবে থাকে।

২। চিপস প্রবাহের গতির দিক টুলের কাটিং এজ এর লম্বের সহিত কোণ করে থাকে।

৩। কাটিং বলের তিনটি উপাদান পরস্পর লম্ব ভাবে কাজ করে।

৪। ওয়ার্কপিসের চওড়া কাটিং এজ কর্তৃক পরিষ্কার হতে পারে বা নাও হতে পারে।

৫। টুল লাইফ কম।

মেশিনিং টাইম বলিতে কি বুঝ?

মেশিনিং টাইমঃ লেদ মেশিনে জবকে মেশিনিং করতে যে সময়ের প্রয়ােজন হয় তাকে মেশিনিং টাইম বলে।

মেশিনিং টাইম Tm = ( L / Ns)

আরও পড়ুনঃ লেদ মেশিন ও মিলিং মেশিনের মধ্যে পার্থক্য

Next Post Previous Post
1 Comments
  • Md Minhajul Islam YT
    Md Minhajul Islam YT 7:45 AM

    অনেক সুন্দর একটি পোস্ট যা আমাদের জানার খুব প্রয়োজন।

Add Comment
comment url